ঢাকা ০২:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মনের যত্নে ফিরে যান প্রকৃতির সান্নিধ্যে

রীর ও মনের সুস্থতা পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। মন বিষণ্ণ হলে তার প্রভাব পড়ে শরীরেও। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে আমরা প্রতিক্রমে প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। মোবাইল, ল্যাপটপ আর টেলিভিশনের স্ক্রিনে বন্দি জীবনে প্রকৃতির ছোঁয়া যেন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অথচ আধুনিক গবেষণা বলছে—প্রকৃতির সান্নিধ্য মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

‘ইকোথেরাপি’ বা প্রকৃতি থেরাপি হলো এমন একটি স্বীকৃত চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে গাছপালা, নদী, পাহাড়, আকাশ—এই সব উপাদান মানুষের মনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এটি উদ্বেগ, বিষণ্নতা, একাকিত্ব ও ক্লান্তি কমাতে কার্যকর।

একসময় আমাদের জীবনে প্রকৃতির উপস্থিতি ছিল খুব স্বাভাবিক—বাড়ির পেছনের গাছ, পুকুরপাড়, খেলার মাঠ। এখন শহুরে জীবনে সূর্যের আলো পর্যন্ত দেখা হয় না অনেকের। এতে শরীর যেমন দুর্বল হয়, মনও হয়ে পড়ে নিঃসঙ্গ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সবুজ পরিবেশ বা ‘গ্রিন কেয়ার’ মানুষের চিন্তা পরিষ্কার করে, মন শান্ত রাখে। নদীর ধারে সময় কাটানো বা ‘ব্লু স্পেস’-এ উপস্থিতি মনকে স্বস্তি দেয়। ইউরোপে ১৮টি দেশে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত নদীর ধারে সময় কাটানো মানুষদের মানসিক চাপ অনেকটাই কম থাকে।

প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে কেউ বাগান করেন, কেউ পাহাড়ে ট্র্যাকিংয়ে যান, কেউ ঘোড়া বা কুকুরের সঙ্গে সময় কাটান, আবার কেউ অংশ নেন ‘ফরেস্ট বাথিং’-এ, যেখানে জঙ্গলে হেঁটে প্রকৃতিকে অনুভব করা হয়। এসব কার্যকলাপ প্রকৃতির সঙ্গে গভীর সংযোগ তৈরি করে এবং মনকে পুনরুজ্জীবিত করে। শুধু বাইরে যাওয়াই নয়, ইনডোর গাছের মাধ্যমে ঘরের ভেতরেও প্রকৃতির ছোঁয়া আনা সম্ভব। এমনকি দিনে মাত্র ১০ মিনিট প্রকৃতির সংস্পর্শ মানসিক চাপ কমায়, মনোযোগ বাড়ায়।

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে যে সবসময় ওষুধ বা চিকিৎসকের দরকার হয় তা নয়। প্রতিদিন প্রকৃতির দিকে একটু মনোযোগ দিলেই পাওয়া যেতে পারে সুস্থতা। প্রকৃতির কোলে ফেরা হতে পারে আমাদের সবার জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রয়, শান্তি এবং আরামদায়ক।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত

মনের যত্নে ফিরে যান প্রকৃতির সান্নিধ্যে

আপডেট সময় : ০২:৫৩:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

রীর ও মনের সুস্থতা পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। মন বিষণ্ণ হলে তার প্রভাব পড়ে শরীরেও। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে আমরা প্রতিক্রমে প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। মোবাইল, ল্যাপটপ আর টেলিভিশনের স্ক্রিনে বন্দি জীবনে প্রকৃতির ছোঁয়া যেন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অথচ আধুনিক গবেষণা বলছে—প্রকৃতির সান্নিধ্য মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

‘ইকোথেরাপি’ বা প্রকৃতি থেরাপি হলো এমন একটি স্বীকৃত চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে গাছপালা, নদী, পাহাড়, আকাশ—এই সব উপাদান মানুষের মনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এটি উদ্বেগ, বিষণ্নতা, একাকিত্ব ও ক্লান্তি কমাতে কার্যকর।

একসময় আমাদের জীবনে প্রকৃতির উপস্থিতি ছিল খুব স্বাভাবিক—বাড়ির পেছনের গাছ, পুকুরপাড়, খেলার মাঠ। এখন শহুরে জীবনে সূর্যের আলো পর্যন্ত দেখা হয় না অনেকের। এতে শরীর যেমন দুর্বল হয়, মনও হয়ে পড়ে নিঃসঙ্গ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সবুজ পরিবেশ বা ‘গ্রিন কেয়ার’ মানুষের চিন্তা পরিষ্কার করে, মন শান্ত রাখে। নদীর ধারে সময় কাটানো বা ‘ব্লু স্পেস’-এ উপস্থিতি মনকে স্বস্তি দেয়। ইউরোপে ১৮টি দেশে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত নদীর ধারে সময় কাটানো মানুষদের মানসিক চাপ অনেকটাই কম থাকে।

প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে কেউ বাগান করেন, কেউ পাহাড়ে ট্র্যাকিংয়ে যান, কেউ ঘোড়া বা কুকুরের সঙ্গে সময় কাটান, আবার কেউ অংশ নেন ‘ফরেস্ট বাথিং’-এ, যেখানে জঙ্গলে হেঁটে প্রকৃতিকে অনুভব করা হয়। এসব কার্যকলাপ প্রকৃতির সঙ্গে গভীর সংযোগ তৈরি করে এবং মনকে পুনরুজ্জীবিত করে। শুধু বাইরে যাওয়াই নয়, ইনডোর গাছের মাধ্যমে ঘরের ভেতরেও প্রকৃতির ছোঁয়া আনা সম্ভব। এমনকি দিনে মাত্র ১০ মিনিট প্রকৃতির সংস্পর্শ মানসিক চাপ কমায়, মনোযোগ বাড়ায়।

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে যে সবসময় ওষুধ বা চিকিৎসকের দরকার হয় তা নয়। প্রতিদিন প্রকৃতির দিকে একটু মনোযোগ দিলেই পাওয়া যেতে পারে সুস্থতা। প্রকৃতির কোলে ফেরা হতে পারে আমাদের সবার জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রয়, শান্তি এবং আরামদায়ক।