ঢাকা ০২:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাইলসের সমস্যা বাড়ে শীতে, মুক্তি মিলবে ঘরোয়া উপায়ে

  • চেতনায়২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০১:২৮:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৩১ বার পড়া হয়েছে

খুবই অস্বস্তিকর দুটি স্বাস্থ্য সমস্যা ফিসার আর পাইলস। লক্ষণ একই রকম হলেও দুটি রোগ ভিন্ন। শীতের দিনে এই সমস্যা আরও বেশি বেড়ে যায়। ঘরোয়া কিছু উপায় কাজে লাগিয়ে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

পাইলস কী? 

মানুষের মলদ্বারে তিনটি শিরা থাকে। শিরায় চাপ পড়লে সেগুলো ফুলে যায়। এমন অবস্থায় মলত্যাগের সময় স্ট্রেনের কারণে স্নায়ু আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এগুলো আঁচিলের আকার ধারণ করে। এই পরিস্থিতিকে চিকিৎসার পরিভাষায় পাইলস বলে।

পাইলস (Hemorrhoids) হলে মলদ্বারের ভেতর থেকে রক্তনালীর একটি পিন্ড ফুলে যায় এবং কখনো কখনো এটি বাইরে বের হয়ে আসে। পাইলসের সমস্যায় সাধারণত ব্যথা হয় না। তবে পরিস্থিতি জটিল হলে ব্যথা হতে পারে। এই রোগটি অর্শরোগ নামেও পরিচিত।

পাইলস কেন হয়? 

মূলত খারাপ জীবনযাপন এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে পাইলস হয়ে থাকে। কিছু খাবার এই সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। আবার কিছু বাজে অভ্যাসও পাইলসের জন্য দায়ী। পাইলস হওয়ার কিছু কারণ হলো-

দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য
পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া
বারবার ডায়রিয়া

পায়খানার বেগ আটকে রাখা
টয়লেটে অতিরিক্ত সময় ব্যয়
পায়খানার সময় জোরে চাপ দেওয়া
শরীরের অতিরিক্ত ওজন
শারীরিক পরিশ্রম না করা
পায়ুপথে সহবাস

পাইলস হলে কী কী হয়? 

পাইলস বা হেমোরয়েড হলে সাধারণ যেসব সমস্যা দেখা দেয় সেগুলো হলো-

মলদ্বারের চারপাশে ফুলে যাওয়া
মলদ্বারে রক্তপাত
পায়ু এলাকায় চুলকানি, ব্যথা, অস্বস্তি
মলত্যাগের সময় কোনো ব্যথা ছাড়াই রক্তপাত,
মলদ্বারের কাছে সংবেদনশীল বা বেদনাদায়ক পিণ্ডের উপস্থিতি

পাইলস হলে করণীয়

পাইলসের সমস্যা দেখা দিলে লবণযুক্ত খাবার কম খান। কারণ এসব খাবার সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়।

পানি পানের পরিমাণ বাড়ান। প্রতিদিন ১৫-২০ গ্লাস পানি পান করুন। তবে কিডনিজনিত সমস্যা থাকলে পানি পানের পরিমাণ সম্পর্কে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

খাদ্যতালিকায় রাখুন করল্লা, লাউ এবং খোসা ছাড়ানো সবজি। বেশি করে সালাদ খান। ডাল ও সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। সেসঙ্গে বেশি পানি পান করতে হবে। খাবার খাওয়ার পর হালকা গরম দুধ পান করুন।

পেঁপে, তরমুজের মতো মৌসুমি ফল বেশি খান। খাদ্যতালিকায় রাখুন দুধ, দই এবং বাটার মিল্ক।

বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন। ঘরে রান্না করা খাবার খান। ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কুসুম গরম পানি পান করুন।

রোজ সকালে নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি পানিতে মিশিয়ে পান করুন। এতে পায়খানা স্বাভাবিক থাকে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস থেকে মুক্ত থাকা যায়। তবে বেশি পরিমাণে ইসবগুলের ভুসি খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা ও ব্যাথা হতে পারে। তাই পরিমাণমতো খান।

প্রতিদিন সকালে হাঁটুন। যোগব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম অনুশীলন করুন।

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

ধূমপান, অ্যালকোহল এবং তামাক এড়িয়ে চলুন। এগুলো পাইলসের সমস্যা বাড়ায়।

টক ও মশলাদার খাবার খাবেন না। চা, কফি ও কোল্ড ড্রিংকস এড়িয়ে চলুন।

অতিরিক্ত লবণ বা চিনি খাবেন না। জাঙ্ক ফুড যেমন পিৎজা, বার্গার বা মিহি আটা দিয়ে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলুন। ডুবো তেলে ভাজা খাবার খাবেন না।

খুব বেশিক্ষণ এক অবস্থানে বসবেন না বা দাঁড়াবেন না, বিশেষত যদি এটি স্ট্রেন বা ব্যথার কারণ হয়।

মলত্যাগের সময় কোষ্ঠকাঠিন্য বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন।

টক খাবারের সঙ্গে কিংবা খাওয়ার পরপরই দুধ পান করবেন না।

 

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত

পাইলসের সমস্যা বাড়ে শীতে, মুক্তি মিলবে ঘরোয়া উপায়ে

আপডেট সময় : ০১:২৮:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

খুবই অস্বস্তিকর দুটি স্বাস্থ্য সমস্যা ফিসার আর পাইলস। লক্ষণ একই রকম হলেও দুটি রোগ ভিন্ন। শীতের দিনে এই সমস্যা আরও বেশি বেড়ে যায়। ঘরোয়া কিছু উপায় কাজে লাগিয়ে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

পাইলস কী? 

মানুষের মলদ্বারে তিনটি শিরা থাকে। শিরায় চাপ পড়লে সেগুলো ফুলে যায়। এমন অবস্থায় মলত্যাগের সময় স্ট্রেনের কারণে স্নায়ু আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে এগুলো আঁচিলের আকার ধারণ করে। এই পরিস্থিতিকে চিকিৎসার পরিভাষায় পাইলস বলে।

পাইলস (Hemorrhoids) হলে মলদ্বারের ভেতর থেকে রক্তনালীর একটি পিন্ড ফুলে যায় এবং কখনো কখনো এটি বাইরে বের হয়ে আসে। পাইলসের সমস্যায় সাধারণত ব্যথা হয় না। তবে পরিস্থিতি জটিল হলে ব্যথা হতে পারে। এই রোগটি অর্শরোগ নামেও পরিচিত।

পাইলস কেন হয়? 

মূলত খারাপ জীবনযাপন এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে পাইলস হয়ে থাকে। কিছু খাবার এই সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। আবার কিছু বাজে অভ্যাসও পাইলসের জন্য দায়ী। পাইলস হওয়ার কিছু কারণ হলো-

দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য
পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া
বারবার ডায়রিয়া

পায়খানার বেগ আটকে রাখা
টয়লেটে অতিরিক্ত সময় ব্যয়
পায়খানার সময় জোরে চাপ দেওয়া
শরীরের অতিরিক্ত ওজন
শারীরিক পরিশ্রম না করা
পায়ুপথে সহবাস

পাইলস হলে কী কী হয়? 

পাইলস বা হেমোরয়েড হলে সাধারণ যেসব সমস্যা দেখা দেয় সেগুলো হলো-

মলদ্বারের চারপাশে ফুলে যাওয়া
মলদ্বারে রক্তপাত
পায়ু এলাকায় চুলকানি, ব্যথা, অস্বস্তি
মলত্যাগের সময় কোনো ব্যথা ছাড়াই রক্তপাত,
মলদ্বারের কাছে সংবেদনশীল বা বেদনাদায়ক পিণ্ডের উপস্থিতি

পাইলস হলে করণীয়

পাইলসের সমস্যা দেখা দিলে লবণযুক্ত খাবার কম খান। কারণ এসব খাবার সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়।

পানি পানের পরিমাণ বাড়ান। প্রতিদিন ১৫-২০ গ্লাস পানি পান করুন। তবে কিডনিজনিত সমস্যা থাকলে পানি পানের পরিমাণ সম্পর্কে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

খাদ্যতালিকায় রাখুন করল্লা, লাউ এবং খোসা ছাড়ানো সবজি। বেশি করে সালাদ খান। ডাল ও সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। সেসঙ্গে বেশি পানি পান করতে হবে। খাবার খাওয়ার পর হালকা গরম দুধ পান করুন।

পেঁপে, তরমুজের মতো মৌসুমি ফল বেশি খান। খাদ্যতালিকায় রাখুন দুধ, দই এবং বাটার মিল্ক।

বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন। ঘরে রান্না করা খাবার খান। ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কুসুম গরম পানি পান করুন।

রোজ সকালে নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি পানিতে মিশিয়ে পান করুন। এতে পায়খানা স্বাভাবিক থাকে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস থেকে মুক্ত থাকা যায়। তবে বেশি পরিমাণে ইসবগুলের ভুসি খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা ও ব্যাথা হতে পারে। তাই পরিমাণমতো খান।

প্রতিদিন সকালে হাঁটুন। যোগব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম অনুশীলন করুন।

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

ধূমপান, অ্যালকোহল এবং তামাক এড়িয়ে চলুন। এগুলো পাইলসের সমস্যা বাড়ায়।

টক ও মশলাদার খাবার খাবেন না। চা, কফি ও কোল্ড ড্রিংকস এড়িয়ে চলুন।

অতিরিক্ত লবণ বা চিনি খাবেন না। জাঙ্ক ফুড যেমন পিৎজা, বার্গার বা মিহি আটা দিয়ে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলুন। ডুবো তেলে ভাজা খাবার খাবেন না।

খুব বেশিক্ষণ এক অবস্থানে বসবেন না বা দাঁড়াবেন না, বিশেষত যদি এটি স্ট্রেন বা ব্যথার কারণ হয়।

মলত্যাগের সময় কোষ্ঠকাঠিন্য বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন।

টক খাবারের সঙ্গে কিংবা খাওয়ার পরপরই দুধ পান করবেন না।