ঢাকা ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মিরপুরে কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল বিস্ফোরণ, শিশু আহত শাহরুখ খানকে দেশ ছাড়ার পরামর্শ বাংলাদেশি শহিদুল আলমকে কেৎজিয়েত কারাগারে বন্দি রেখেছে ইসরায়েল ফিলিপাইন-ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প: কেটেছে সুনামির আশঙ্কা, ভেসে উঠেছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নোবেল পুরস্কার না পেলে ট্রাম্প কী করবেন ভেবেই নরওয়েতে ‘আতঙ্ক’! বিশ্বনাথে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০ বিশ্বব্যাপী শান্তি রক্ষা মিশনে বাহিনী হ্রাসের সিদ্ধান্ত: বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য রাষ্ট্রীয় ভাতা চালু হচ্ছে জেহাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে না পারলে তার আত্মা কষ্ট পাবে: তারেক রহমান যুক্তরাষ্ট্র চায় না ইরান নিজের পায়ে দাঁড়াক : পেজেশকিয়ান

‘আমি আজ কাঁদব, যুদ্ধ আমাদের কাঁদার সময়ও দেয়নি’

  • চেতনায়২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৫:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ২১০ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘ ২ বছরের ইসরায়েলি বর্বরতার পর এলো যুদ্ধবিরতির ঘোষণা। ফিলিস্তিনের গাজায় এখন বাঁধভাঙা উল্লাস। গাজাজুড়ে যখন উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে, তখন অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

তেমনি একজন ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় বাড়ি ঘর হারিয়ে গত বছর খান ইউনিসের দেইর আল বালাহ এলাকায় আশ্রয় নেওয়া গাজা সিটির বাসিন্দা আহমেদ দাহমানের মা বুশরা। খবর রয়টার্সের।

রয়টার্সকে তিনি জানান, ইসরায়েলের বাহিনীর বোমার আঘাতে বাড়িঘরের পাশাপাশি তার স্বামীকেও হারিয়েছেন তিনি, কিন্তু তাকে দাফন করতে পারেননি। ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই তার মরদেহ রেখেই প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটতে হয়েছে তাদের।বুশরা বলেন, অবশেষে গাজায় রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে এবং আমাদের জীবন রক্ষা পাচ্ছে— এটা আনন্দের খবর তবে আমি যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত। আমরা যখন ফিরব, তখন দেখব যে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।আমার স্বামীর লাশ ধ্বংসস্তূপের তলায় রেখে পালাতে বাধ্য হয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে আমার প্রথম কাজ হবে তার দেহাবশেষ খুঁজে বের করে দাফন সম্পন্ন করা।

আহমেদ দাহমানের মা বুশরা আরও বলেন, এ যুদ্ধবিরতি আমার স্বামীকে ফেরত দিতে পারবে না, কিন্তু অন্তত অনেকের জীবন রক্ষা পাবে। আমি আজ কাঁদব, এমন কান্না কাঁদব যা এর আগে কখনও, কোনোদিন কাঁদিনি। এই নিষ্ঠুর যুদ্ধ আমাদের কাঁদার সময়ও দেয়নি। ইসরায়েলি বোমা থেকে বাঁচতে শুধুই পালিয়ে বেড়িয়েছি।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

যুদ্ধবিরতির এই প্রথম দফার স্থায়িত্ব হবে ৬ সপ্তাহ। এই ছয় সপ্তাহে নিজেদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।

এর পরিবর্তে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে।

চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বুধবার রাতেই আনন্দ মিছিল বের করেন গাজার দক্ষিণাঞলীয় শহর খান ইউনিসের বাসিন্দারা। কিশোর তরুণরা বাঁশি-খঞ্জনি-ড্রাম বাজিয়ে, নেচে গেয়ে উল্লাস শুরু করেন।

এ খবরে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে। কেউ খুশিতে কাঁদছেন-হাততালি দিচ্ছেন, কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ গান গাইছেন-নাচানাচি করছেন এবং চিৎকার করে বলছেন ‘আল্লাহু আকবর’।

ইমান আল কৌকা নামের এক তরুণী এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, আজ আমাদের আনন্দের দিন, আজ আমাদের দুঃখেরও দিন। এটা এমন দিন যার জন্য আমরা হাসব— আবার যুদ্ধে আমরা যাদের হারিয়েছি, যা যা হারিয়েছে— সেসব স্মরণ করে কাঁদব।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মিরপুরে কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল বিস্ফোরণ, শিশু আহত

‘আমি আজ কাঁদব, যুদ্ধ আমাদের কাঁদার সময়ও দেয়নি’

আপডেট সময় : ০৫:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

দীর্ঘ ২ বছরের ইসরায়েলি বর্বরতার পর এলো যুদ্ধবিরতির ঘোষণা। ফিলিস্তিনের গাজায় এখন বাঁধভাঙা উল্লাস। গাজাজুড়ে যখন উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে, তখন অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

তেমনি একজন ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় বাড়ি ঘর হারিয়ে গত বছর খান ইউনিসের দেইর আল বালাহ এলাকায় আশ্রয় নেওয়া গাজা সিটির বাসিন্দা আহমেদ দাহমানের মা বুশরা। খবর রয়টার্সের।

রয়টার্সকে তিনি জানান, ইসরায়েলের বাহিনীর বোমার আঘাতে বাড়িঘরের পাশাপাশি তার স্বামীকেও হারিয়েছেন তিনি, কিন্তু তাকে দাফন করতে পারেননি। ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই তার মরদেহ রেখেই প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটতে হয়েছে তাদের।বুশরা বলেন, অবশেষে গাজায় রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে এবং আমাদের জীবন রক্ষা পাচ্ছে— এটা আনন্দের খবর তবে আমি যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত। আমরা যখন ফিরব, তখন দেখব যে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।আমার স্বামীর লাশ ধ্বংসস্তূপের তলায় রেখে পালাতে বাধ্য হয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে আমার প্রথম কাজ হবে তার দেহাবশেষ খুঁজে বের করে দাফন সম্পন্ন করা।

আহমেদ দাহমানের মা বুশরা আরও বলেন, এ যুদ্ধবিরতি আমার স্বামীকে ফেরত দিতে পারবে না, কিন্তু অন্তত অনেকের জীবন রক্ষা পাবে। আমি আজ কাঁদব, এমন কান্না কাঁদব যা এর আগে কখনও, কোনোদিন কাঁদিনি। এই নিষ্ঠুর যুদ্ধ আমাদের কাঁদার সময়ও দেয়নি। ইসরায়েলি বোমা থেকে বাঁচতে শুধুই পালিয়ে বেড়িয়েছি।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

যুদ্ধবিরতির এই প্রথম দফার স্থায়িত্ব হবে ৬ সপ্তাহ। এই ছয় সপ্তাহে নিজেদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।

এর পরিবর্তে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে।

চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বুধবার রাতেই আনন্দ মিছিল বের করেন গাজার দক্ষিণাঞলীয় শহর খান ইউনিসের বাসিন্দারা। কিশোর তরুণরা বাঁশি-খঞ্জনি-ড্রাম বাজিয়ে, নেচে গেয়ে উল্লাস শুরু করেন।

এ খবরে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে। কেউ খুশিতে কাঁদছেন-হাততালি দিচ্ছেন, কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ গান গাইছেন-নাচানাচি করছেন এবং চিৎকার করে বলছেন ‘আল্লাহু আকবর’।

ইমান আল কৌকা নামের এক তরুণী এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, আজ আমাদের আনন্দের দিন, আজ আমাদের দুঃখেরও দিন। এটা এমন দিন যার জন্য আমরা হাসব— আবার যুদ্ধে আমরা যাদের হারিয়েছি, যা যা হারিয়েছে— সেসব স্মরণ করে কাঁদব।