ঢাকা ০২:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলের যত মিথ্যাচার।

  • চেতনায়২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • ২১৫ বার পড়া হয়েছে

গাজায় ইসরাইল কেবল গণহত্যাই চালাচ্ছে না, বরং এটি এমন একটি যুদ্ধ যা তারা মিথ্যাচার ও ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে জিততে চায়। ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি গাজায় তাদের কর্মকাণ্ডকে যৌক্তিকতা দিতে ব্যাপক আকারে তথ্য যুদ্ধও চালাচ্ছে ইসরাইল। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের। 

আর ইসরাইলের দেয়া এসব ভুল তথ্য প্রচার করছে অনেক পশ্চিমা গণমাধ্যম। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত তেলআবিবের কিছু মিথ্যাচার এবং প্রচারণামূলক প্রচেষ্টা এখানে তুলে ধরা হল।

শিশুদের শিরশ্ছেদ করা: 

হামাস ৪০টি শিশুর’ শিরশ্ছেদ করেছে, এমন খবর ছড়িয়ে দিয়েছিল ইসরাইল। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ৭১ নম্বর ইউনিটের চরমপন্থি কমান্ডার ডেভিড বেন জিয়ন আই২৪ নিউজকে দেয়া সাক্ষাতকারে এমন দাবি করেছিলেন।

দখলদার বাহিনীর এমন দাবি প্রথম খণ্ডন করে বার্তা সংস্থা আনাদোলু। একজন ইসরাইলি সামরিক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে আনাদোলু জানায়, তারা ইসরাইলের ‘আই২৪ নিউজ’ চ্যানেলের দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। যদিও এই খবর সামাজিক এবং মূলধারার গণমাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল।

কথিত শিরশ্ছেদ করা শিশুদের ছবি ইসরাইল কখনও প্রকাশ করেনি, কারণ এরকম ঘটনা প্রকৃতপক্ষে ঘটেইনি।

গণধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতন: 

ইসরাইলের আরেকটি মিথ্যা প্রচারণা হচ্ছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস গণধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতন চালিয়েছে।

৪০টি শিশুর শিরশ্ছেদ করার দাবির মতো, যৌন নির্যাতনের অভিযোগও প্রমাণ করতে পারেনি তেলআবিব। ইসরাইলি স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা জাকারার একজন স্বেচ্ছাসেবক চাইম ওটমাজগিন প্রথমে এ দাবি করেছিলেন।

হামাস নিরীহ মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে:

গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাসের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করে আসছে। এই দাবিও প্রমাণ করতে পারেনি ইসরাইল।

তেলআবিব অভিযোগ করে, আল শিফা হাসপাতাল থেকে পরিচালিত হয় হামাস। তবে ইসরাইল এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ, যেমন ভিডিও ফুটেজ বা ছবি কোনোকিছুই সরবরাহ করতে পারেনি।

প্রকৃত বাস্তবতা হচ্ছে, গাজায় হাজার হাজার নিরীহ মানুকে হত্যা করছে ইসরাইলি বাহিনী।

হামাস ত্রাণ সামগ্রী চুরি করছে:

গত মার্চ থেকে গাজায় প্রবেশকারী মানবিক সহায়তার ওপর পূর্ণ অবরোধ বজায় রেখেছে। তাদের অভিযোগ উপত্যকায় প্রবেশ করা ত্রাণ সামগ্রী চুরি করে নিয়ে যায় হামাস।

তাদের এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয় যখন গত ২৫ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) জোর দিয়ে বলে যে, হামাস মানবিক সহায়তা চুরি করেছে, এমন কোনো প্রমাণ তারা পায়নি।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীও নিউইয়র্ক টাইমসকে জানায়, হামাস মানবিক সাহায্য চুরি করেছে এমন কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।

সাংবাদিকরা হামাসের হয়ে কাজ করছেন:

গণহত্যা শুরু হওয়ার পর থেকেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামাসকে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনছে ইসরাইল।

২০২৪ সালের অক্টোবরে ইসরাইল দাবি করেছিল, ছয়জন আল জাজিরার সাংবাদিক এই গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছিলেন। আল জাজিরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, ইসরাইল সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করছে।

সবশেষ গত আগস্ট মাসে নাসের হাসপাতালে হামলা চালিয়ে পাঁচজন সাংবাদিককে হত্যা করে ইসরাইল। ইসরাইল এই হামলার যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে গিয়ে বলে, হাসপাতালে থাকা একটি ক্যামেরা ছিল হামাসের।

হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বাধা দিচ্ছে:

ইসরাইলের আরেকটি বড় মিথ্যাচার হচ্ছে, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বাধা দিয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে কাতার, মিশর এবং এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাবিত অনেক যুদ্ধবিরতি চুক্তি হামাস মেনে নিয়েছে।

গত মে মাসে হামাস কাতার এবং মিশরের প্রস্তাবিত তিন-পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়।

২০২৪ সালের মে মাসে হামাস আরো একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়েছিল।

গত আগস্টে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের উপস্থাপিত একটি চুক্তি গ্রহণ করে হামাস।

এছাড়া, গত জানুয়ারিতে, তারা আরেকটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতেও সম্মত হয়েছিল।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় নেতানিয়াহু অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর অনেক প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করেছেন।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে, নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। একই বছরের ফেব্রুয়ারিতে, তিনি হামাসের উপস্থাপিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতিটিতে ভেটো দিয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা কম দেখানো:

গাজায় যুদ্ধের ফলে ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা ইসরাইল ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে এনেছে। তারা প্রায়ই আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের দেয়া পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে।

ইসরাইল বরাবরই নিহতের খবর কম দেখিয়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

স্বাধীন পর্যবেক্ষকরা ব্যাপকভাবে একমত যে ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা ইসরাইলের প্রতিবেদনের চেয়ে অনেক বেশি।

নির্বিচারে হামলার দাবি অস্বীকার: 

ইসরায়েল দাবি করছে যে তারা হামাস ও তাদের অবকাঠামোতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা, মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং সংবাদমাধ্যমের অসংখ্য প্রতিবেদনে বেসামরিক এলাকা, যার মধ্যে রয়েছে বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল এবং শরণার্থী শিবিরেও ব্যাপক হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামলায় গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

ইসরাইলের একটি নৈতিক সেনাবাহিনী আছে: 

ইসরাইলি নেতা এবং সমর্থকরা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের সেনাবাহিনীকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক সেনাবাহিনী’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন।

অথচ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংস্থাগুলো ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেছে। নেতানিয়াহুর পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এরইমধ্যে ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত

গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলের যত মিথ্যাচার।

আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

গাজায় ইসরাইল কেবল গণহত্যাই চালাচ্ছে না, বরং এটি এমন একটি যুদ্ধ যা তারা মিথ্যাচার ও ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে জিততে চায়। ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি গাজায় তাদের কর্মকাণ্ডকে যৌক্তিকতা দিতে ব্যাপক আকারে তথ্য যুদ্ধও চালাচ্ছে ইসরাইল। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের। 

আর ইসরাইলের দেয়া এসব ভুল তথ্য প্রচার করছে অনেক পশ্চিমা গণমাধ্যম। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত তেলআবিবের কিছু মিথ্যাচার এবং প্রচারণামূলক প্রচেষ্টা এখানে তুলে ধরা হল।

শিশুদের শিরশ্ছেদ করা: 

হামাস ৪০টি শিশুর’ শিরশ্ছেদ করেছে, এমন খবর ছড়িয়ে দিয়েছিল ইসরাইল। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ৭১ নম্বর ইউনিটের চরমপন্থি কমান্ডার ডেভিড বেন জিয়ন আই২৪ নিউজকে দেয়া সাক্ষাতকারে এমন দাবি করেছিলেন।

দখলদার বাহিনীর এমন দাবি প্রথম খণ্ডন করে বার্তা সংস্থা আনাদোলু। একজন ইসরাইলি সামরিক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে আনাদোলু জানায়, তারা ইসরাইলের ‘আই২৪ নিউজ’ চ্যানেলের দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। যদিও এই খবর সামাজিক এবং মূলধারার গণমাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল।

কথিত শিরশ্ছেদ করা শিশুদের ছবি ইসরাইল কখনও প্রকাশ করেনি, কারণ এরকম ঘটনা প্রকৃতপক্ষে ঘটেইনি।

গণধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতন: 

ইসরাইলের আরেকটি মিথ্যা প্রচারণা হচ্ছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস গণধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতন চালিয়েছে।

৪০টি শিশুর শিরশ্ছেদ করার দাবির মতো, যৌন নির্যাতনের অভিযোগও প্রমাণ করতে পারেনি তেলআবিব। ইসরাইলি স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা জাকারার একজন স্বেচ্ছাসেবক চাইম ওটমাজগিন প্রথমে এ দাবি করেছিলেন।

হামাস নিরীহ মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে:

গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাসের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করে আসছে। এই দাবিও প্রমাণ করতে পারেনি ইসরাইল।

তেলআবিব অভিযোগ করে, আল শিফা হাসপাতাল থেকে পরিচালিত হয় হামাস। তবে ইসরাইল এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ, যেমন ভিডিও ফুটেজ বা ছবি কোনোকিছুই সরবরাহ করতে পারেনি।

প্রকৃত বাস্তবতা হচ্ছে, গাজায় হাজার হাজার নিরীহ মানুকে হত্যা করছে ইসরাইলি বাহিনী।

হামাস ত্রাণ সামগ্রী চুরি করছে:

গত মার্চ থেকে গাজায় প্রবেশকারী মানবিক সহায়তার ওপর পূর্ণ অবরোধ বজায় রেখেছে। তাদের অভিযোগ উপত্যকায় প্রবেশ করা ত্রাণ সামগ্রী চুরি করে নিয়ে যায় হামাস।

তাদের এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয় যখন গত ২৫ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) জোর দিয়ে বলে যে, হামাস মানবিক সহায়তা চুরি করেছে, এমন কোনো প্রমাণ তারা পায়নি।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীও নিউইয়র্ক টাইমসকে জানায়, হামাস মানবিক সাহায্য চুরি করেছে এমন কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই।

সাংবাদিকরা হামাসের হয়ে কাজ করছেন:

গণহত্যা শুরু হওয়ার পর থেকেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামাসকে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনছে ইসরাইল।

২০২৪ সালের অক্টোবরে ইসরাইল দাবি করেছিল, ছয়জন আল জাজিরার সাংবাদিক এই গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছিলেন। আল জাজিরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, ইসরাইল সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করছে।

সবশেষ গত আগস্ট মাসে নাসের হাসপাতালে হামলা চালিয়ে পাঁচজন সাংবাদিককে হত্যা করে ইসরাইল। ইসরাইল এই হামলার যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে গিয়ে বলে, হাসপাতালে থাকা একটি ক্যামেরা ছিল হামাসের।

হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বাধা দিচ্ছে:

ইসরাইলের আরেকটি বড় মিথ্যাচার হচ্ছে, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বাধা দিয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে কাতার, মিশর এবং এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাবিত অনেক যুদ্ধবিরতি চুক্তি হামাস মেনে নিয়েছে।

গত মে মাসে হামাস কাতার এবং মিশরের প্রস্তাবিত তিন-পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়।

২০২৪ সালের মে মাসে হামাস আরো একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়েছিল।

গত আগস্টে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের উপস্থাপিত একটি চুক্তি গ্রহণ করে হামাস।

এছাড়া, গত জানুয়ারিতে, তারা আরেকটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতেও সম্মত হয়েছিল।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় নেতানিয়াহু অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর অনেক প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করেছেন।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে, নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। একই বছরের ফেব্রুয়ারিতে, তিনি হামাসের উপস্থাপিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতিটিতে ভেটো দিয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা কম দেখানো:

গাজায় যুদ্ধের ফলে ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা ইসরাইল ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে এনেছে। তারা প্রায়ই আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের দেয়া পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে।

ইসরাইল বরাবরই নিহতের খবর কম দেখিয়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

স্বাধীন পর্যবেক্ষকরা ব্যাপকভাবে একমত যে ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা ইসরাইলের প্রতিবেদনের চেয়ে অনেক বেশি।

নির্বিচারে হামলার দাবি অস্বীকার: 

ইসরায়েল দাবি করছে যে তারা হামাস ও তাদের অবকাঠামোতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা, মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং সংবাদমাধ্যমের অসংখ্য প্রতিবেদনে বেসামরিক এলাকা, যার মধ্যে রয়েছে বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল এবং শরণার্থী শিবিরেও ব্যাপক হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামলায় গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

ইসরাইলের একটি নৈতিক সেনাবাহিনী আছে: 

ইসরাইলি নেতা এবং সমর্থকরা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের সেনাবাহিনীকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক সেনাবাহিনী’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন।

অথচ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংস্থাগুলো ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেছে। নেতানিয়াহুর পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এরইমধ্যে ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।