ঢাকা ০২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় ১১ সেনা নিহত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ারসন্ত্রাসী হামলায় দেশটির সামরিক বাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং একজন মেজরসহ ১১ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। পাল্টা আক্রমণে ১৯ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে সেনাবাহিনী। 

দেশটির ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, মঙ্গলবার রাতে ওরাকজাই জেলায় গোয়েন্দা তথ্য-ভিত্তিক অভিযানের (আইবিও) সময় সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে অতর্কিত হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। তীব্র গোলাগুলিতে ১১ সৈন্য শহীদ হন এবং ১৯ জন ভারত-সমর্থিত ‘খোয়ারিজ’কে হত্যা করা হয়।

আফগান তালেবানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পাকিস্তানি ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)- এর সন্ত্রাসীদের সম্বোধন করতে ‘ফিতনা আল খোয়ারিজ’ শব্দটি ব্যবহার করে পাকিস্তান সরকার এবং ভারতের মদদে গোষ্ঠীটি জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গুলি বিনিময়ের সময় ৩৯ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ তারিক, যিনি সৈন্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এবং তার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড, ৩৩ বছর বয়সী মেজর তৈয়ব রাহাত তাদের নয়জন সৈন্যের সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতি জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী ১৯ জন সন্ত্রাসীকে হত্যার জন্য দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ এবং মেজর রাহাতসহ সৈন্যদের শাহাদাতের জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।

শেহবাজ শরীফ আরও বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর নির্ভীক সন্তানদের আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যাবে না। আমরা ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের ঘৃণ্য উদ্দেশ্য চূর্ণ করব। পাকিস্তানের অখণ্ডতার ক্ষতি করে এমন উপাদানগুলোকে আমরা সফল হতে দেব না। সরকার দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের হুমকি নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

গত মাসেও খাইবার পাখতুনখোয়ার দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে টিটিপির হামলায় দেশটির সামরিক বাহিনীর ১২ সদস্য নিহত হয়েছেন। এসময় তীব্র গুলি বিনিময়ে ১৩ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে সেনাবাহিনী।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের শেষের দিকে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করার পর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশের ওপর ব্যাপকহারে হামলা চালিয়ে আসছে টিটিপি। বিশেষ করে খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজ, গত কয়েক মাস ধরে, বান্নু, পেশোয়ার, কারাক, লাক্কি মারওয়াত এবং বাজাউরসহ খাইবার-পাখতুনখোয়ায় একাধিক এলাকা পুলিশ বাহিনীর ওপর ধারাবাহিক হামলার শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালে জঙ্গিরা দেশব্যাপী ৩৩৫টি হামলা চালিয়ে ৫২০ জনকে হত্যা করে।

পাকিস্তান সরকার বলেছে, ভারতের সমর্থনে জঙ্গিরা প্রতিবেশী আফগানিস্তানের ভেতর থেকে তাদের তৎপরতা চালায়, যেখানে তারা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং হামলার পরিকল্পনা করে। তবে কাবুলের তালেবান সরকার ও নয়াদিল্লি এই অভিযোগ বারবারই অস্বীকার করেছে।

সূত্র: ডন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত

পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় ১১ সেনা নিহত

আপডেট সময় : ০৫:০৬:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ারসন্ত্রাসী হামলায় দেশটির সামরিক বাহিনীর একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং একজন মেজরসহ ১১ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। পাল্টা আক্রমণে ১৯ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে সেনাবাহিনী। 

দেশটির ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, মঙ্গলবার রাতে ওরাকজাই জেলায় গোয়েন্দা তথ্য-ভিত্তিক অভিযানের (আইবিও) সময় সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে অতর্কিত হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। তীব্র গোলাগুলিতে ১১ সৈন্য শহীদ হন এবং ১৯ জন ভারত-সমর্থিত ‘খোয়ারিজ’কে হত্যা করা হয়।

আফগান তালেবানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পাকিস্তানি ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)- এর সন্ত্রাসীদের সম্বোধন করতে ‘ফিতনা আল খোয়ারিজ’ শব্দটি ব্যবহার করে পাকিস্তান সরকার এবং ভারতের মদদে গোষ্ঠীটি জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গুলি বিনিময়ের সময় ৩৯ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ তারিক, যিনি সৈন্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এবং তার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড, ৩৩ বছর বয়সী মেজর তৈয়ব রাহাত তাদের নয়জন সৈন্যের সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতি জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী ১৯ জন সন্ত্রাসীকে হত্যার জন্য দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ এবং মেজর রাহাতসহ সৈন্যদের শাহাদাতের জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।

শেহবাজ শরীফ আরও বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর নির্ভীক সন্তানদের আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যাবে না। আমরা ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের ঘৃণ্য উদ্দেশ্য চূর্ণ করব। পাকিস্তানের অখণ্ডতার ক্ষতি করে এমন উপাদানগুলোকে আমরা সফল হতে দেব না। সরকার দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের হুমকি নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

গত মাসেও খাইবার পাখতুনখোয়ার দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে টিটিপির হামলায় দেশটির সামরিক বাহিনীর ১২ সদস্য নিহত হয়েছেন। এসময় তীব্র গুলি বিনিময়ে ১৩ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে সেনাবাহিনী।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের শেষের দিকে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করার পর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশের ওপর ব্যাপকহারে হামলা চালিয়ে আসছে টিটিপি। বিশেষ করে খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজ, গত কয়েক মাস ধরে, বান্নু, পেশোয়ার, কারাক, লাক্কি মারওয়াত এবং বাজাউরসহ খাইবার-পাখতুনখোয়ায় একাধিক এলাকা পুলিশ বাহিনীর ওপর ধারাবাহিক হামলার শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালে জঙ্গিরা দেশব্যাপী ৩৩৫টি হামলা চালিয়ে ৫২০ জনকে হত্যা করে।

পাকিস্তান সরকার বলেছে, ভারতের সমর্থনে জঙ্গিরা প্রতিবেশী আফগানিস্তানের ভেতর থেকে তাদের তৎপরতা চালায়, যেখানে তারা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং হামলার পরিকল্পনা করে। তবে কাবুলের তালেবান সরকার ও নয়াদিল্লি এই অভিযোগ বারবারই অস্বীকার করেছে।

সূত্র: ডন