দু’দিনের সফরে ভারত গেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষকি বৈঠকের পাশাপাশি আরও কর্মসূচি রয়েছে তার।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ঘোষণার পর থেকেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছিল, এবার কি ব্রিটেনে ভারতীয়দের ভিসানীতির পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে?
সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন স্টার্মার। তিনি স্পষ্টই জানান, ভারতের সঙ্গে ভিসা চুক্তির কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে যে নতুন বাণিজ্যচুক্তি সই হয়েছে, তা বাস্তবে অর্থনৈতিক লাভে কীভাবে পরিবর্তন করা সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা হবে।
বুধবার সকালে মুম্বাই বিমানবন্দরে নামেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস, উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দে এবং অজিত পওয়ার। তার ভারত সফরে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে তার ইঙ্গিত দিলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্প্রতি স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি সম্পূর্ণরূপে ব্যবসা এবং বিনিয়োগই গুরুত্ব পাবে।
ভিসা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে ব্রিটেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা পরিকল্পনার অংশ নয়। ব্রিটেনের অভিবাসন নীতির কোনও পরিবর্তন হবে না।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম ভারতে এলেন স্টার্মার। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যচুক্তি এখনও ঝুলেই রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েন চলছে নয়াদিল্লির। এই টানাপোড়ণের মধ্যেই সম্প্রতি ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে স্টার্মারের ভারত সফর আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন স্টার্মার।
ওই বৈঠকের পরে মুম্বাইয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে একটি আলোচনাচক্রেও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে স্টার্মারের। সেখানে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞ এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় যোগ দিতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
গত ২৪ জুলাই লন্ডন থেকে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই চুক্তির কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদি এবং স্টার্মার। এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার পরে ব্রিটেনে তৈরি বা ব্রিটেন থেকে আমদানিকৃত চিকিৎসা সরঞ্জাম, বিমান সরঞ্জাম ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য আগের চেয়ে সস্তা হয়ে যাবে।
ব্রিটেনে তৈরি পানীয় (সফট ড্রিঙ্কস), চকোলেট, প্রসাধনী সামগ্রী, বিস্কুট এবং স্যামন মাছ ভারতীয়দের জন্য অনেক সহজলভ্য হবে। এই সব পণ্যে এত দিন গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক কার্যকর থাকত। মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির ফলে তা কমে দাঁড়াবে তিন শতাংশে। বৈদ্যুতিক গাড়ির শুল্ক ১১০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমে আসবে।
এই বাণিজ্যচুক্তিই তার ভারত সফরের কেন্দ্রবিন্দু তা বার বার বুঝিয়ে দিয়েছেন স্টার্মার। তবে আমেরিকা এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থায় কঠোর নীতি নেওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, ভারতের প্রতিভাবানদের জন্য ব্রিটেনের দরজা আরও প্রশস্ত হবে।
ভিসানীতিতেও বদল আসতে পারে। যদি স্টার্মার বলেন, বিশ্ব জুড়ে শীর্ষ প্রতিভাদের সন্ধান করে ব্রিটেন।
কিন্তু ট্রাম্পের অধীনে এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থা পরিবর্তনের পর ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের জন্য এখনই কোনও নতুন পথ খোলার পরিকল্পনা নেই আমাদের।