ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার (৬ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় গাজা পরিস্থিতি, ফিলিস্তিনি সংকট এবং মধ্যপ্রাচ্যের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি গুরুত্ব পায়।
ফোনালাপটি ছিল গত জুলাইয়ের পর তৃতীয়বারের মতো। ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আলোচনার সময় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইনগত কাঠামোর ভিত্তিতে ফিলিস্তিনি সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রতি মস্কোর ‘অবিচল অবস্থান’ পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন অপরিহার্য।
আলোচনায় মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক বিভিন্ন সংকট নিয়েও কথা হয়। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চলমান উদ্বেগ, সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি—এই বিষয়গুলো উঠে আসে পুতিন ও নেতানিয়াহুর আলোচনায়।
বিশেষ করে গাজা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ‘শান্তি প্রস্তাব’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে গাজা যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয় নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক আয়োজন করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
সেখানে মুসলিম বিশ্বের আট দেশের শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন। দেশগুলো হলো: সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মিশর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান।
এই বৈঠকের ধারাবাহিকতায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন ট্রাম্প। এরপর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন।
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনায় গাজায় হামাসের কার্যক্রম থামানো, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের অবসানকে মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
হামাস এ পরিকল্পনার প্রতি ‘ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া’ জানায়, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আশাবাদের সঞ্চার করে।
পুতিন এই শান্তি পরিকল্পনার প্রশংসা করেন এবং বলেন, এই উদ্যোগ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনার একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। একইসঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ট্রাম্পের এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের মাধ্যমে গাজা সংকটের টেকসই সমাধান সম্ভব হবে।
তবে পুতিন আবারও জোর দিয়ে বলেন, গাজা কিংবা ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান শুধু তখনই স্থায়ী হবে, যখন সেখানে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পাবে।
সূত্র: আল জাজিরা