তিনি বলেন, ‘তারা তো দেশের নাগরিক। যদিও তারা অনুশোচনা করেনি, এখন পর্যন্ত প্রায়শ্চিত্ত করেনি, অনুতপ্ত হয়নি। কিন্তু তার পরেও তাদের বাদ দিয়ে তো নির্বাচন হতে পারে না।
হাসান হাফিজ বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে আপনারা মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব হিসেবে জাতির কাছে পৌঁছাবেন। পুলসিরাতের মধ্যে আপনারা আছেন।
আমরা চাইব, আপনারা সেই রকম দৃঢ়তার পরিচয় দেবেন। দেশপ্রেমের পরিচয় দেবেন, অঙ্গীকারের পরিচয় দেবেন। আমাদের দেশের যে ইতিহাস, সেটা খুবই মর্মান্তিক। আর আগের অতীতে নির্বাচনগুলো যারা পরিচালনা করেছেন তারা এখন কাঠগড়ায় দাঁড়াচ্ছেন।
আপনাদের সামনেও কিন্তু সেই আশঙ্কাটা আছে।’
তিনি বলেন, এ রকম সুযোগ আমরা পাইনি, যে রকম ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান হয়েছে। তাদের রক্তের সঙ্গে আমরা যেন বেঈমানি না করি। সেটা আপনাদের কাছ থেকে আমরা আশা করব। আপনারা ব্যক্তি মানুষ নন।
আমরা দর্পণ, আপনারা হচ্ছেন অক্সিজেন। আপনাদের ছাড়া দেশের স্থিতি আসবে না। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাটা সফল হবে না। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার লালন, বিকাশ কিছুই হবে না।
ভবিষ্যতে ভয়ংকর স্বৈরাচার কাঁধে চেপে বসতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা সুযোগ পেয়েছি একটা দেশকে নতুন করে গড়ার। এটা হয়তো ৫০ বছর, ১০০ বছরে আসবে না। হয়তো ভবিষ্যতে এর চেয়েও ভয়ংকর স্বৈরাচার আমাদের কাঁধে চেপে বসতে পারে। সুতরাং এখনই সময় সেই রকম দৃঢ়তার পরিচয় দেওয়া। আমরা আপনাদের কাছে সেটা আশা করব।
কবি হাসান হাফিজ বলেন, ষড়যন্ত্র আছে, নির্বাচনটাকে নস্যাৎ করার জন্য দেশের ভেতরে আছে, দেশের বাইরে আছে। এত বড় নির্বাচন, এটা কিন্তু শুধু সেনাবাহিনী, শুধু নির্বাচন কমিশন, শুধু আমলাতন্ত্র, পুলিশ, আনসার, র্যাব তাদের একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। আমি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করতে চাই, প্রতিটা নির্বাচনী এলাকায় আমরা যদি একটা কমিটি করি একদম ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত। রাজনৈতিক নেতাকর্মী বাদ দিয়ে সামাজিক শক্তি যারা আছে পেশাজীবী, ধরেন একটা এলাকার গণ্যমান্য শিক্ষক যারা সবাই মুরব্বি। যারা রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও তরুণদের নিয়ে একটা যদি আমরা কমিটি করি। সেই কমিটি নজরদারি করবে এবং সব কিছুর নজরদারি করবে। আপনি যদি যুক্ত করেন, সম্পৃক্ত করেন তাহলে দায়িত্ববোধটা কিন্তু বাড়বে এবং আপনাদের কাজটা অনেকাংশে হালকা হয়ে আসবে এবং সবাইকে যদি এটার সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন তাহলে এটা একটা বড় জিনিস হতে পারে। এটা আপনারা মোটিভেট করতে পারেন। এটা একটা চিন্তার মধ্যে রাখতে পারেন।
তিনি বলেন, সাইবার নজরদারিটা আপনাদের বাড়াতে হবে। কারণ যে রকম প্রোপাগান্ডা এখন বেশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এআই দিয়ে হচ্ছে। আপনারা বলেছেন আগে যে এআই একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তো সেটার নজরদারিটা বাড়াতে হবে, সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এ ব্যাপারে আপনারা কিন্তু বিদেশি সহায়তাও পাবেন। ইতিমধ্যে কিছু পেয়েছেন। আপনাদের সক্ষমতা আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, প্রবাসীরা আমাদের চেয়ে বেশি দেশপ্রেমিক। তাদের রক্তে, ঘামে, শ্রমে কিন্তু বাংলাদেশ একটা দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। সুতরাং তাদের আমরা যেন যথাযথ সম্মান করি এবং আমি নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রস্তাবনায় বলেছিলাম যে তাদের প্রতিনিধিত্ব যেন সরকারে থাকে।