নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্মৃতি রানী বর্মণ (২৫) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার সাত ভাইয়াপাড়া এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত স্মৃতি রানী কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার উত্তর দুর্গাপুর এলাকার শ্যামু চন্দ্র বর্মণের মেয়ে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই শ্যামু চন্দ্র বর্মণ শনিবার (৪ অক্টোবর) ভোররাতে সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রায় ৯ বছর আগে স্মৃতির বিয়ে হয় সোনারগাঁ উপজেলার সাত ভাইয়াপাড়ার বেনু চন্দ্র বর্মণের ছেলে সনজিৎ চন্দ্র বর্মণের (৩২) সঙ্গে। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, বিয়ের পর থেকেই স্মৃতি রানীর স্বামী সনজিৎ চন্দ্র বর্মণ, শ্বশুর বেনু চন্দ্র বর্মণ, শাশুড়ি জোসনা রানী বর্মণ, খালাতো বোন স্বরসতি চন্দ্র বর্মণ মিলে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। পরে তিন লাখ টাকা পরিশোধ করা হলেও বাকি দুই লাখ টাকার জন্য নির্যাতন অব্যাহত রাখেন তারা।
অভিযোগে আরো বলা হয়, গত ২ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে স্মৃতি রানী তার ভাই শ্যামুকে ফোনে জানায়, যৌতুকের বাকি দুই লাখ টাকা দ্রুত পরিশোধ করতে হবে, না হলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। পরদিন সকালে স্বামী সনজিৎ ফোনে ওই টাকা দাবি করে এবং না দিলে সংসার না করার হুমকি দেয়। এরপর দুপুরে তারা খবর পায় স্মৃতি রানীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে গিয়ে স্মৃতির মরদেহ দেখতে পান।
তার গলায় শ্বাসরোধের স্পষ্ট দাগ ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই স্মৃতির মৃত্যু হয়। তবে শ্বশুরবাড়ির কেউই তখন হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না।
নিহতের ভাই শ্যামু চন্দ্র বর্মণ অভিযোগ করে বলেন, ‘যৌতুকের টাকার জন্যই পরিকল্পিতভাবে তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সবাই পলাতক।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) রাশেদুল ইসলাম জানান, ‘এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে, লাশ মর্গে রয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।’