ঢাকা ০২:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আইনের প্যাঁচে আটকে গেলেন বিচারক!

  • চেতনায়২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ১২:৩৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২২০ বার পড়া হয়েছে

বিচারকের আসনে বসে তিনি অনেক অপরাধীকেই সাজা দিয়েছেন। এবার তিনি নিজেই আটকে গেলেন আইনের মারপ্যাঁচে। কাজের মেয়েকে বিয়ের অভিযোগে নিজ স্ত্রীর করা বিভাগীয় মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পেশাজীবনে পদোন্নতি বন্ধ হয়ে গেল বিচারক মো. আলমগীর কবির রাজের। সম্প্রতি গাইবান্ধার সাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা জজ) মো. আলমগীর কবির রাজ বিভাগীয় শাস্তির মুখে পড়েছেন। ‘ভবিষ্যৎ পদোন্নতি বন্ধ’ এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাকে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ এর বিধি ২(চ) অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ০২/২০২১ নং বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। মামলার প্রক্রিয়ায় আলমগীর কবির রাজের বিরুদ্ধে ‘ভবিষ্যত পদোন্নতি বন্ধকরণ’ শাস্তির প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্টে প্রেরণ করা হয়। পরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সরকারের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে। ফলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী এবং বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ এর বিধি ১৬(খ)(২) অনুযায়ী তাকে ‘ভবিষ্যত পদোন্নতি বন্ধকরণ’ দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সচিব (চলতি দায়িত্ব) লিয়াকত আলী মোল্লা।

আইনজ্ঞরা বলছেন, একজন বিচারক ঘরের বিচার করতে না পারলে বাইরের বিচার করবেন কীভাবে? একজন বিচারকের প্রধান ও অন্যতম দায়িত্ব হবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, বিচারপ্রার্থীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। কিন্তু সেটি থেকে বিরত থেকে নিজেই অপরাধ করেছেন জুডিশিয়াল সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

এ প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইডস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বিচারকের বিয়ে করা অপরাধ না। তবে তথ্য গোপন এবং পূর্বের স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া একাধিক বিয়ে করা অন্যায় ও বেআইনি। একজন মুসলিম ইসলামি শরিয়া মতে চারটি বিয়ে করতে পারেন। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলে ছয় মাসের দণ্ডপ্রাপ্ত হবেন। যে বিচারক এরকম করেছেন তার তো চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার কথা। ছয় মাসের সাজা হওয়ার কথা। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে আইন মন্ত্রণালয় তার পদোন্নতি বন্ধ করে দিয়েছে।’

মনজিল মোরসেদ বলেন, বিচারক যদি ঘরের বিচারই না করতে পারেন তাহলে বাইরে বিচার করবেন কীভাবে? এমন হলে তো বিচারের বাণী নীরবে কাঁদবে।

বিচারকের অবিচারসুলভ আচরণ মোটেও কাম্য নয় উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এরকম হলে মোটেও ন্যায়নিশ্চিত করা যাবে না। তথ্য গোপন কোনো মতেই ঠিক না। বিচারকরা বিচার করেন। তার বাসায় অবিচারকসুলভ আচরণ করলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যাবে না।’

এই আইনজ্ঞ আরও বলেন, ‘বিচারক তো আইনের ঊর্ধ্বে নন। বিচারক নিজের ঘরের মধ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে বাইরে করবেন কীভাবে!’

তবে অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি জানান, সাজাপ্রাপ্ত বিচারক এই বিষয়ে প্রতিকার চাইতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন। সেখানে গিয়ে তার পদোন্নতি বন্ধকরণের বিষয়ে আপিল করতে পারবেন।

এর আগে গাইবান্ধার সাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আলমগীর কবির রাজের ভবিষ্যৎ পদোন্নতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা। বিচারক হিসেবে তাঁর অসদাচরণ প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের সূচনা হয় ২০১৮ সালের ৫ জুন। আলমগীর কবির রাজের বিরুদ্ধে অসদাচরণমূলক আচরণ সম্পর্কে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাইবান্ধার তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশেদা সুলতানা সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। তাতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৫ জুন গাইবান্ধার পুলিশ সুপারের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে তিনি জানতে পারেন যে, এক নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। ওই নারী অতিরিক্ত জেলা জজ রাজেসের প্রথম স্ত্রী। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও গণমাধ্যমের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান।

জেলা জজের চিঠিতে বলা হয়, ওই ঘটনায় গণমাধ্যমের পাশাপাশি সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপকভাবে সংবাদ প্রচারিত হয়। পরদিন রাজের প্রথম স্ত্রী জেলা জজের সঙ্গে দেখা করে জানান যে, তার স্বামী বাসার কাজের মেয়েকে বিনা অনুমতিতে বিয়ে করে গোপন রেখেছেন। তার স্বামী তাকে এবং সন্তানদের নিয়মিত ভরণপোষণও দেন না। এতে বিচার বিভাগের সম্মান ও ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর রাজের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

জেলা জজের চিঠির পর বিচারক রাজের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়। তবে রাজের দেওয়া ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় পরে অভিযোগ অনুসন্ধানে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিককে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করে মন্ত্রণালয়। অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত

আইনের প্যাঁচে আটকে গেলেন বিচারক!

আপডেট সময় : ১২:৩৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিচারকের আসনে বসে তিনি অনেক অপরাধীকেই সাজা দিয়েছেন। এবার তিনি নিজেই আটকে গেলেন আইনের মারপ্যাঁচে। কাজের মেয়েকে বিয়ের অভিযোগে নিজ স্ত্রীর করা বিভাগীয় মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পেশাজীবনে পদোন্নতি বন্ধ হয়ে গেল বিচারক মো. আলমগীর কবির রাজের। সম্প্রতি গাইবান্ধার সাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা জজ) মো. আলমগীর কবির রাজ বিভাগীয় শাস্তির মুখে পড়েছেন। ‘ভবিষ্যৎ পদোন্নতি বন্ধ’ এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাকে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ এর বিধি ২(চ) অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ০২/২০২১ নং বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। মামলার প্রক্রিয়ায় আলমগীর কবির রাজের বিরুদ্ধে ‘ভবিষ্যত পদোন্নতি বন্ধকরণ’ শাস্তির প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্টে প্রেরণ করা হয়। পরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সরকারের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে। ফলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী এবং বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ এর বিধি ১৬(খ)(২) অনুযায়ী তাকে ‘ভবিষ্যত পদোন্নতি বন্ধকরণ’ দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সচিব (চলতি দায়িত্ব) লিয়াকত আলী মোল্লা।

আইনজ্ঞরা বলছেন, একজন বিচারক ঘরের বিচার করতে না পারলে বাইরের বিচার করবেন কীভাবে? একজন বিচারকের প্রধান ও অন্যতম দায়িত্ব হবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, বিচারপ্রার্থীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। কিন্তু সেটি থেকে বিরত থেকে নিজেই অপরাধ করেছেন জুডিশিয়াল সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

এ প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইডস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বিচারকের বিয়ে করা অপরাধ না। তবে তথ্য গোপন এবং পূর্বের স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া একাধিক বিয়ে করা অন্যায় ও বেআইনি। একজন মুসলিম ইসলামি শরিয়া মতে চারটি বিয়ে করতে পারেন। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলে ছয় মাসের দণ্ডপ্রাপ্ত হবেন। যে বিচারক এরকম করেছেন তার তো চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার কথা। ছয় মাসের সাজা হওয়ার কথা। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে আইন মন্ত্রণালয় তার পদোন্নতি বন্ধ করে দিয়েছে।’

মনজিল মোরসেদ বলেন, বিচারক যদি ঘরের বিচারই না করতে পারেন তাহলে বাইরে বিচার করবেন কীভাবে? এমন হলে তো বিচারের বাণী নীরবে কাঁদবে।

বিচারকের অবিচারসুলভ আচরণ মোটেও কাম্য নয় উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এরকম হলে মোটেও ন্যায়নিশ্চিত করা যাবে না। তথ্য গোপন কোনো মতেই ঠিক না। বিচারকরা বিচার করেন। তার বাসায় অবিচারকসুলভ আচরণ করলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যাবে না।’

এই আইনজ্ঞ আরও বলেন, ‘বিচারক তো আইনের ঊর্ধ্বে নন। বিচারক নিজের ঘরের মধ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে বাইরে করবেন কীভাবে!’

তবে অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি জানান, সাজাপ্রাপ্ত বিচারক এই বিষয়ে প্রতিকার চাইতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন। সেখানে গিয়ে তার পদোন্নতি বন্ধকরণের বিষয়ে আপিল করতে পারবেন।

এর আগে গাইবান্ধার সাবেক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আলমগীর কবির রাজের ভবিষ্যৎ পদোন্নতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা। বিচারক হিসেবে তাঁর অসদাচরণ প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের সূচনা হয় ২০১৮ সালের ৫ জুন। আলমগীর কবির রাজের বিরুদ্ধে অসদাচরণমূলক আচরণ সম্পর্কে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাইবান্ধার তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশেদা সুলতানা সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। তাতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৫ জুন গাইবান্ধার পুলিশ সুপারের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে তিনি জানতে পারেন যে, এক নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। ওই নারী অতিরিক্ত জেলা জজ রাজেসের প্রথম স্ত্রী। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও গণমাধ্যমের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান।

জেলা জজের চিঠিতে বলা হয়, ওই ঘটনায় গণমাধ্যমের পাশাপাশি সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপকভাবে সংবাদ প্রচারিত হয়। পরদিন রাজের প্রথম স্ত্রী জেলা জজের সঙ্গে দেখা করে জানান যে, তার স্বামী বাসার কাজের মেয়েকে বিনা অনুমতিতে বিয়ে করে গোপন রেখেছেন। তার স্বামী তাকে এবং সন্তানদের নিয়মিত ভরণপোষণও দেন না। এতে বিচার বিভাগের সম্মান ও ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর রাজের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

জেলা জজের চিঠির পর বিচারক রাজের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়। তবে রাজের দেওয়া ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় পরে অভিযোগ অনুসন্ধানে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিককে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করে মন্ত্রণালয়। অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়।