এবারের এশিয়া কাপ শুরুর আগে সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন ছিল– ভারত-পাকিস্তান তাদের নির্ধারিত ম্যাচে মুখোমুখি হবে কি না। কারণ ভারতজুড়ে তখন দুই দলের ম্যাচ বয়কটের ডাক দিয়েছিল একটি পক্ষ। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ট্রেন্ডে পরিণত হয়। তবে টুর্নামেন্ট শুরু হতেই সেই বয়কট আন্দোলন ব্যর্থতার মুখ দেখে। এসবের মাঝেই আজ (রোববার) এশিয়া কাপের ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান।
গণমাধ্যমের তথ্যমতে, এই ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে (সোল্ড আউট)। পাক-ভারত লড়াইয়ের ভেন্যু দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যেখানে দর্শক ধারণক্ষমতা ২৮ হাজার। এমন হাইভোল্টেজ ম্যাচের জন্য নির্ধারিত ভেন্যুর আসন কম বলে আলোচনা হতে পারে। তবে দুই দলই যে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলছে সে হিসেবে মেনে নিতেই হচ্ছে! একইসঙ্গে দুই সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া বয়কটের আহবানও বিবেচ্য বিষয়।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের বরাতে ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআই বলছে, গ্রুপপর্ব ও সুপার ফোর দু’বারই ভারত-পাকিস্তান দুবাইয়ের একই মাঠে খেলেছে। যেখানে ১৪ সেপ্টেম্বর তাদের প্রথম দেখায় মাঠে হাজির ছিল ২০ হাজার দর্শক। ২১ সেপ্টেম্বর হওয়া সুপার ফোরে কমে আসে দর্শকের সংখ্যা। সেদিন ১৭ হাজার দর্শক মাঠে হাজির ছিল। তবে ফাইনালের আগে নির্ধারিত ২৮ হাজার আসনের সব টিকিটই বিক্রি হয়ে গেছে।
১৯৮৪ সালে এশিয়া কাপের পথচলা শুরু। চলতি বছরের আসর দিয়ে চার দশক পূরণ করেছে এই টুর্নামেন্ট। দীর্ঘ পথচলায় ভিন্ন অনেক অভিজ্ঞতারই সাক্ষী মহাদেশীয় এই সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা। এতকিছুর পরও একটা বিষয়ে আক্ষেপ রয়েই যাচ্ছিল। তবে সে আক্ষেপটা ঘুচে যাচ্ছে এবার। এশিয়া কাপে আগের ৪১ বছরে যা হয়নি, সেটাই হবে এবার। প্রথমবার ভারত-পাকিস্তান এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে।
গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচ জিতে সুপার ফোরে এসেছিল সূর্যকুমার যাদবের দল। সুপার ফোরেও ৩ ম্যাচের সবকটিতে জিতে তারা ফাইনালে উঠেছে। এবারের টুর্নামেন্টে টিম ইন্ডিয়া শিরোপা জয়ের দৌড়ে সবচেয়ে ফেভারিট তা নতুন করে বলাই বাহুল্য। মাঠেও খেলছে সেভাবেই। পাকিস্তান পুরো টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচের মধ্যে দুটিতে হেরেছে, দু’বারই তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। দুই দলের পরিসংখ্যান ও পারফরম্যান্সের দিক থেকে পাকিস্তান পিছিয়ে থাকলেও, সাম্প্রতিক নানা কারণে এই ফাইনালের উত্তেজনা যে অনেক বেশি থাকবে সেটাও নিশ্চিত।
তবে ফাইনালের আগে ঘুরে-ফিরে আসছে টুর্নামেন্টজুড়ে ভারত-পাকিস্তানের সৃষ্টি করা নানা বিতর্ক। পেহেলগামে সে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কটের ডাক উঠেছিল, তারই জের ধরে ভারতীয় দল ‘নো হ্যান্ডশেক’ ইস্যু বেছে নিয়েছে। যা এখনও মানতে রাজি নয় পাকিস্তান। এমনকি তাদের সঙ্গে কথা না বলারও পথে হাঁটার কথা ছিল ভারতের, যদিও ম্যাচের উত্তেজনায় সেটি পুরোপুরি মানা কঠিনই বটে। হারিস রউফ-শাহিন আফ্রিদিরা নিশ্চয়ই জোর করে তাদের কথা বলতে বাধ্য করবেন আগের ম্যাচের মতো করেই।