গত বছর জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মিথ্যাভাবে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত এবং অব্যাহতি দেওয়ার লক্ষ্যে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে কমিটি গঠন করেছে সরকার।
এই কমিটি অভুত্থানের মামলাগুলি পর্যবেক্ষণ করে মিথ্যাভাবে ও হয়রানির উদ্দেশ্যে কোনও ব্যক্তিকে জড়িত করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি তদারকি করবে।
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধিতে ১৭৩ক ধারা সংযোজনের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। এ ধারা সংযোজনের ফলে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের পূর্বেই হয়রানীমূলক বিবেচনায় জড়িত ব্যক্তিদের অব্যাহতি চেয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন দাখিল করতে পারে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও, জেলা ও মহানগর পর্যায়ের সমস্ত কমিটি তত্ত্বাবধানের জন্য মন্ত্রণালয় পর্যায়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব শফিউল আলম স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
নবসংযোজিত ১৭৩ক ধারার অধীনে নতুন বিধানগুলি সঠিকভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা কিংবা তদন্ত কর্মকর্তাগণ সঠিক অন্তর্বর্তীকালীন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিচ্ছেন কিনা তা তদারকির জন্য গঠিত কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ধারা ১৭৩ক অনুসারে, যেকোনো মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যদি পর্যাপ্ত প্রমাণ না পাওয়া যায় তাহলে পুলিশ কমিশনার বা জেলা পুলিশ সুপার বা তদন্ত তত্ত্বাবধানকারী সমমানের পদমর্যাদার অন্য কোনও কর্মকর্তা সেই সব অভিযুক্তদের অব্যহতি চেয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিতে পারেন। উক্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে ম্যাজিস্ট্রেট সন্তুষ্ট হলে অভিযুক্তকে অথবা অভিযুক্তদের অব্যাহতির আদেশ দিতে পারেন।
জেলা পর্যায়ে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি থাকবে, যার সদস্য হবেন পুলিশ সুপার ও পাবলিক প্রসিকিউটর। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) কমিটির সদস্য সচিব হবেন।
মহানগর এলাকার জন্য, মহানগর পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে অনুরূপ একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটিতে বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধি ও একজন মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর সদস্য হিসেবে থাকবেন এবং পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা সদস্য সচিব হবেন।
মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হবেন আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সদস্য থাকবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব অথবা সিনিয়র সহকারী সচিব সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন।
জেলা ও মহানগর কমিটি অন্তর্বর্তীকালীন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তদারকি করবে এবং প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কতজন অভিযুক্তকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে তা রেকর্ড রাখবেন। কমিটিগুলো মাসে দু’বার মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির কাছে তাদের অনুসন্ধান এবং সুপারিশের বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবে।