গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। রোববার সিপিজের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
সোমবার প্রেস গ্যাজেট এক প্রতিবেদনে জানায়, রোববার ইচ্ছাকৃতভাবে ‘টার্গেট’ করে তাঁবুতে থাকা ওই সাংবাদিকদের হত্যা করে ইসরাইল।
ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় আল জাজিরার সাংবাদিক আনাস আল-শরিফ, মোহাম্মদ কুরেইকেহ, ক্যামেরা অপারেটর ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নওফাল ও মোয়ামেন আলিওয়া নিহত হন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের কাছে তাদের সংবাদকর্মীদের ব্যবহৃত একটি তাঁবুতে এই হামলা চালানো হয়।
ইসরাইলের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ‘আল-শরিফ আল জাজিরার সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতেন। তবে তিনি মূলত হামাস সদস্য এবং তিনি ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিক এবং আইডিএফ সেনাদের ওপর রকেট হামলা চালিয়েছিলেন।’
তবে সিপিজের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলের দীর্ঘদিনের একটি প্রবণতা হলো, তারা সাংবাদিকদের সন্ত্রাসী হিসেবে অভিযুক্ত করে, কিন্তু তার পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দেখায় না।
এত আরো বলা হয়, ইসরাইল কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দেখানো ছাড়াই সাংবাদিকদের জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করছে। এরফলে ইসরাইলের উদ্দেশ্য ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংগঠন সিপিজের বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিকেরা বেসামরিক নাগরিক। তাদের কখনোই হামলার নিশানা করা উচিত নয়। এই হত্যার জন্য যারা দায়ী, তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
সিপিজে বলছে, ইসরাইল আগে কোনো প্রমাণ ছাড়াই যে কয়েকজন সাংবাদিককে হামাসের সদস্য বলে অভিহিত করেছিল, তাদেরই একজন ছিলেন শরিফ।
সিপিজের হিসাম অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে আইডিএফ কমপক্ষে ১৭৮ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে হত্যা করেছে।
আল জাজিরার নির্বাহী প্রযোজক জন লরেন্স বলেন, ‘আনাসের বয়স মাত্র ২৮ বছর। তিনি উত্তর গাজা থেকে রিপোর্টিং চালিয়ে যাওয়ার জন্য অবিশ্বাস্য সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। গাজার সাংবাদিকদের একটি প্রজন্মের সেরা অংশ ইসরাইলি হামলায় শেষ হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করা যুদ্ধাপরাধ, একে স্বাভাবিক হতে দিতে পারি না।’