দীর্ঘ ২ বছরের ইসরায়েলি বর্বরতার পর এলো যুদ্ধবিরতির ঘোষণা। ফিলিস্তিনের গাজায় এখন বাঁধভাঙা উল্লাস। গাজাজুড়ে যখন উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে, তখন অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
তেমনি একজন ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় বাড়ি ঘর হারিয়ে গত বছর খান ইউনিসের দেইর আল বালাহ এলাকায় আশ্রয় নেওয়া গাজা সিটির বাসিন্দা আহমেদ দাহমানের মা বুশরা। খবর রয়টার্সের।
আহমেদ দাহমানের মা বুশরা আরও বলেন, এ যুদ্ধবিরতি আমার স্বামীকে ফেরত দিতে পারবে না, কিন্তু অন্তত অনেকের জীবন রক্ষা পাবে। আমি আজ কাঁদব, এমন কান্না কাঁদব যা এর আগে কখনও, কোনোদিন কাঁদিনি। এই নিষ্ঠুর যুদ্ধ আমাদের কাঁদার সময়ও দেয়নি। ইসরায়েলি বোমা থেকে বাঁচতে শুধুই পালিয়ে বেড়িয়েছি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
যুদ্ধবিরতির এই প্রথম দফার স্থায়িত্ব হবে ৬ সপ্তাহ। এই ছয় সপ্তাহে নিজেদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।
এর পরিবর্তে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বুধবার রাতেই আনন্দ মিছিল বের করেন গাজার দক্ষিণাঞলীয় শহর খান ইউনিসের বাসিন্দারা। কিশোর তরুণরা বাঁশি-খঞ্জনি-ড্রাম বাজিয়ে, নেচে গেয়ে উল্লাস শুরু করেন।
এ খবরে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে। কেউ খুশিতে কাঁদছেন-হাততালি দিচ্ছেন, কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ গান গাইছেন-নাচানাচি করছেন এবং চিৎকার করে বলছেন ‘আল্লাহু আকবর’।
ইমান আল কৌকা নামের এক তরুণী এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, আজ আমাদের আনন্দের দিন, আজ আমাদের দুঃখেরও দিন। এটা এমন দিন যার জন্য আমরা হাসব— আবার যুদ্ধে আমরা যাদের হারিয়েছি, যা যা হারিয়েছে— সেসব স্মরণ করে কাঁদব।