লক্ষ্মীপুর শুরু হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। যার ফলে এই তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। ভোর থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত অবদি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের এ মহড়া চলছে। প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়ার মধ্যেই আছে বিদ্যুৎ।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) লক্ষ্মীপুর পৌরসভা, সদর উপজেলা, রায়পুর, রামগতি , কমলনগর , চন্দ্রগঞ্জ ও রামগঞ্জ ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় প্রায় প্রতি দেড় ঘণ্টা পরপর বিদ্যুৎ আসে এবং মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট পর আবার চলে যায়। রাতে ১০টা থেকে বিদ্যুৎ থাকে না ভোর পর্যন্ত।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাসিন্দা শামসু ইসলাম জানান, সারাদিন অফিসে কাজ করে রাতে ঘুমানোর সময় বিদ্যুৎ চলে ৩ ঘন্টার বেশি সময় বিদ্যুৎ আর আসে না তাই তীব্র গরমে ঘুম আসে না। যার ফলে পরদিন অফিসে গিয়ে কাজে মনোযোগ দেওয়া কষ্টকর হয়ে যায়। এ ছাড়াও আমার বাসায় ছোট বাচ্চা গরমে সারারাত ঘুমাতে পারে না। দ্রুত এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
রায়পুরের সুয়াইবা হক জানান সারাদিন বাসায় থাকতে হয় লোডশেডিং এর কারণে তীব্র গরমে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যায়। রাতে কারেন্ট গেলে আশার নামনেই।
বিসিক শিল্প নগরীর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বেল্লাল জানান, বিদ্যুৎ ঠিকমতো না থাকায় শিল্প কারখানার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারছে না। এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ, তার ওপর বিদ্যুৎ বিভ্রাট মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে কাজ করছে। তিনি আরও জানান, ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে উৎপাদন খরচ বাড়ছে এবং সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করতে পারলে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।কাজ না করতে পারলেও শ্রমিকদের বেতন দিতে হচ্ছে, যা তাদের ওপর আর্থিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর জেনারেল ম্যানেজার বলেন, সারা দেশে বিদ্যুৎ সমস্যা থাকলেও লক্ষ্মীপুর বিশেষ লোডশেডিং হতো না। এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করতে গিয়ে লক্ষ্মীপুর ৩০-৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ কম পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি, লক্ষ্মীপুরআগের মতো নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। সারা দেশে কয়েকটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় লক্ষ্মীপুর সহ সারা দেশেই লোডশেডিং বেড়েছে। লক্ষ্মীপুর বিদ্যুতের চাহিদা অত্যন্ত বেশি, কারণ এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক এবং বিসিক শিল্প কারখানা রয়েছে। আমরা যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি, তা অনুযায়ী লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছি। এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের মতো এলাকায় দীর্ঘ সময় লোডশেডিংয়ের প্রভাব আরও গুরুতর না হতে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা না গেলে সাধারণ মানুষ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।