ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদেশে পাচার অর্থ ফেরাতে ব্যাংকগুলোকে নতুন নির্দেশনা

  • চেতনায়২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৪:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
  • ২০৬ বার পড়া হয়েছে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ দেশের বেশ কিছু শিল্পগোষ্ঠীর নামে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো চুক্তি করবে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ওমর ফারুক খান বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরাতে ১২টি আন্তর্জাতিক আইন ও সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ব্যাংক নেতৃত্ব দেবে, বাকিগুলো একসঙ্গে কাজ করবে। এরপর বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করে টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ তদন্ত সংস্থা স্পার সিআইডি প্রাথমিকভাবে ১১টি দেশীয় শিল্পগোষ্ঠীর নাম শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে বসুন্ধরা, নাসা, এস আলমসহ বেশ কয়েকটি বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর নাম রয়েছে। গোপনীয়তা চুক্তি স্বাক্ষর করে আমরা আন্তর্জাতিক সম্পদ পুনরুদ্ধার সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করব।

এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, এই উদ্যোগে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংক নয়, বরং সব ব্যাংক মিলেই যৌথভাবে কাজ করবে। বৈঠকে প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, যা বহুপাক্ষিক অংশগ্রহণের ইঙ্গিত দেয়।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি করে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর কাজ শুরু হবে।

সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের পাশাপাশি পাচারকারীদের তালিকায় রয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আরামিট গ্রুপ, এস আলম, বসুন্ধরা, বেক্সিমকো, সিকদার, নাসা, ওরিয়ন, জেমকন, নাবিল ও সামিট গ্রুপসহ আরও কয়েকটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, এসব গোষ্ঠীর মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ সুবিধাভোগী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের কাছে গেছে।

এর আগে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছে— স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি সমন্বয় কেন্দ্র, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও আন্তর্জাতিক সম্পদ পুনরুদ্ধার কেন্দ্র। এসব সংস্থা তথ্য সংগ্রহে অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এখন আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন দ্রুত ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে প্রধান উপদেষ্টার ধন্যবাদ

বিদেশে পাচার অর্থ ফেরাতে ব্যাংকগুলোকে নতুন নির্দেশনা

আপডেট সময় : ০৩:৩৪:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ দেশের বেশ কিছু শিল্পগোষ্ঠীর নামে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো চুক্তি করবে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ওমর ফারুক খান বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরাতে ১২টি আন্তর্জাতিক আইন ও সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ব্যাংক নেতৃত্ব দেবে, বাকিগুলো একসঙ্গে কাজ করবে। এরপর বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করে টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ তদন্ত সংস্থা স্পার সিআইডি প্রাথমিকভাবে ১১টি দেশীয় শিল্পগোষ্ঠীর নাম শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে বসুন্ধরা, নাসা, এস আলমসহ বেশ কয়েকটি বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর নাম রয়েছে। গোপনীয়তা চুক্তি স্বাক্ষর করে আমরা আন্তর্জাতিক সম্পদ পুনরুদ্ধার সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করব।

এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, এই উদ্যোগে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংক নয়, বরং সব ব্যাংক মিলেই যৌথভাবে কাজ করবে। বৈঠকে প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, যা বহুপাক্ষিক অংশগ্রহণের ইঙ্গিত দেয়।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি করে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর কাজ শুরু হবে।

সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের পাশাপাশি পাচারকারীদের তালিকায় রয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আরামিট গ্রুপ, এস আলম, বসুন্ধরা, বেক্সিমকো, সিকদার, নাসা, ওরিয়ন, জেমকন, নাবিল ও সামিট গ্রুপসহ আরও কয়েকটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, এসব গোষ্ঠীর মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ সুবিধাভোগী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের কাছে গেছে।

এর আগে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছে— স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি সমন্বয় কেন্দ্র, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও আন্তর্জাতিক সম্পদ পুনরুদ্ধার কেন্দ্র। এসব সংস্থা তথ্য সংগ্রহে অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এখন আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন দ্রুত ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়।