আল্লাহ খুব দূরের সত্তা, তাকে সহজে কাছে পাওয়া যায় না—এ রকম একটি ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। আসলেই কি আল্লাহ দূরের সত্তা? মহান আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, আর আমি তার গলার ধমনী হতেও অধিক নিকটে। (সুরা ক্বাফ: ১৬)
হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে একহাত এগিয়ে যাই। কেউ আমার দিকে একহাত এগিয়ে এলে আমি তার দিকে দুইহাত এগিয়ে যাই। আর কেউ আমার দিকে হেঁটে হেঁটে এলে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই। আপনি হাঁটা শুরু করলে যে সত্তা আপনার দিকে দৌড়ে আসেন, তিনি কি পর হতে পারেন?
আল্লাহ রহমত বা দয়া সৃষ্টি করে সেটাকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। একদিকে রেখেছেন ৯৯ ভাগ আর অন্যদিকে রেখেছেন ১ ভাগ। এই একভাগ ভালোবাসা তিনি পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমগ্র সৃষ্টিকুলের মধ্যে বণ্টন করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:- ‘নতুন বছরের শুরু হোক পশুপাখি ও বৃদ্ধ-শিশুদের জন্য আতঙ্কমুক্ত’
একভাগ দয়ার ক্ষুদ্র একটি অংশ পেয়ে আমরা আমাদের সন্তানদের কত ভালোবাসি! এই একভাগ ভালোবাসার একটি ক্ষুদ্রাংশ পেয়ে হিংস্র বাঘিনী তার শাবককে দুধপান করায়। এই একভাগ ভালোবাসার একটি ক্ষুদ্রাংশ পেয়ে সন্তানদের পৃথিবীতে আনতে গিয়ে মাকড়সা নিজের জীবনকে বিসর্জন দেয়। এই একভাগ ভালোবাসার একটি ক্ষুদ্রাংশ পেয়ে একটি মুরগি প্রবল বৃষ্টিতে ভিজেও ছানাদের বুকের নিচে আগলে রাখে।
তাহলে বাকি নিরানব্বই ভাগ দয়া যার কাছে সঞ্চিত আছে, সৃষ্টির প্রতি তার মমতা কতখানি হতে পারে? আল্লাহ পর নন, তিনি আমাদের বড় আপন। তিনি শুধু চান, কখন আমরা তাকে ডাকব।
আরও পড়ুন:- হারাম রিলেশনকে ‘না’ বলুন:- শায়খ আহমাদুল্লাহ
তাকে হৃদয় থেকে ডাকুন, তার উপস্থিতি আপনি অনুভব করতে পারবেন। আর চলার পথে যিনি আল্লাহকে অনুভব করার গুণ অর্জন করে ফেলেন, পৃথিবীর কোনো দুঃখতাপ তাকে বিচলিত করতে পারে না।
আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রতি রাত্রে শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের মর্যাদাবান বারাকাতপূর্ণ রব দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, যে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেব। যে আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করবে আমি তাকে তা দান করব। যে আমার নিকট মাফ চাইবে আমি তাকে মাফ করে দেব।
(বুখারি, মুসলিম)