ঢাকা ০২:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে যা করবেন

  • চেতনায়২৪ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০২:০৯:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫
  • ২২৯ বার পড়া হয়েছে

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া এখন আর অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।

আর হ্যাকাররা খুব চতুর। কৌশলে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি, এমনকি আর্থিক লেনদেনের তথ্যও হাতিয়ে নিচ্ছে। একবার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলে শুধু প্রোফাইল হারানোর ঝুঁকি নয়। বরং পরিচয় চুরি, প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল এমনকি আপনার বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা করার মতো বড় বিপদও ঘটতে পারে। তাই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার পর দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াই একমাত্র সমাধান।

প্রথমেই, ফেসবুকের ‘Find your account’ বা ‘Report Compromised Account’ টুল ব্যবহার করে লগইন করার চেষ্টা করুন। পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের জন্য ‘Forgot Password’ অপশন ব্যবহার করুন এবং রিকভারি ইমেইল বা ফোন নম্বরে কোড পাঠিয়ে তা দিয়ে অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করুন। যদি হ্যাকার ইমেইল বা ফোন নম্বরও পরিবর্তন করে ফেলে, তাহলে ফেসবুকের ‘Identity Verification’ সিস্টেমে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ক্যান কপি পাঠাতে হবে।

এরপর ইমেইল ও পাসওয়ার্ড সিকিউরিটি চেক করুন। অনেক সময় হ্যাকাররা শুধু ফেসবুক নয়, আপনার ইমেইল বা অন্যান্য সোশ্যাল অ্যাকাউন্টেও ঢুকে যেতে পারে। তাই জিমেইল, ইয়াহু বা অন্য ইমেইল সার্ভিসে ‘Last Account Activity’ চেক করুন। সন্দেহজনক ডিভাইস রিমুভ করুন। একইভাবে অন্য যেসব অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন, সেগুলোর পাসওয়ার্ডও দ্রুত বদলে ফেলুন।

টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) চালু করা এখন আর অপশন নয়; বরং জরুরি। এতে হ্যাকার পাসওয়ার্ড পেলেও দ্বিতীয় ধাপের কোড ছাড়া ঢুকতে পারবে না। এ ছাড়া ‘Login Alerts’ চালু রাখলে অচেনা ডিভাইস বা লোকেশন থেকে কেউ লগইন করলে সঙ্গে সঙ্গে নোটিফিকেশন পাবেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—ফিশিং লিংক থেকে সাবধান। অনেক হ্যাকের মূল সূত্র হচ্ছে ভুয়া লগইন পেজ বা লোভনীয় অফারের লিংক। যেকোনো লিংকে ক্লিক করার আগে যাচাই করুন সেটি আসল ফেসবুক ডোমেইন কি না।

সবশেষে হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্ট ফিরে পাওয়ার পর বন্ধু ও ফলোয়ারদের সতর্ক করুন। হয়তো হ্যাকার আপনার নামে ভুয়া মেসেজ বা প্রতারণামূলক লিংক পাঠিয়েছে। সবাইকে জানিয়ে দিন যেন কেউ সেই লিংকে ক্লিক না করে।

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আমাদের ব্যক্তিগত জীবন, সামাজিক যোগাযোগ ও পেশাগত কাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই হ্যাক হওয়ার পর আতঙ্কিত না হয়ে ধাপে ধাপে সঠিক পদক্ষেপ নিন। ভবিষ্যতে সাইবার নিরাপত্তা নিয়মগুলো মেনে চলুন। একবার সচেতন হলে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।

হ্যাক-সংক্রান্ত সমস্যায় পড়লে জাতীয় সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার (CID) অথবা ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সিতে অভিযোগ জানাতে পারেন। এ ছাড়া ফেসবুকের অফিশিয়াল সাপোর্ট ফর্ম ব্যবহার করে সমস্যার বিস্তারিত রিপোর্ট করলে সমাধানের সম্ভাবনা থাকে।

সবশেষে মনে রাখবেন—ডিজিটাল নিরাপত্তা এক দিনের বিষয় নয়। এটি নিয়মিত অভ্যাসের ফল। শক্তিশালী ও অনন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার, নিয়মিত সিকিউরিটি চেকআপ, সন্দেহজনক অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে ফেসবুক লগইন এড়িয়ে চলা। এই অভ্যাসগুলোই আপনাকে হ্যাকিং থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত রাখবে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে যা করবেন

আপডেট সময় : ০২:০৯:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া এখন আর অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।

আর হ্যাকাররা খুব চতুর। কৌশলে ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি, এমনকি আর্থিক লেনদেনের তথ্যও হাতিয়ে নিচ্ছে। একবার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলে শুধু প্রোফাইল হারানোর ঝুঁকি নয়। বরং পরিচয় চুরি, প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল এমনকি আপনার বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা করার মতো বড় বিপদও ঘটতে পারে। তাই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার পর দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াই একমাত্র সমাধান।

প্রথমেই, ফেসবুকের ‘Find your account’ বা ‘Report Compromised Account’ টুল ব্যবহার করে লগইন করার চেষ্টা করুন। পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের জন্য ‘Forgot Password’ অপশন ব্যবহার করুন এবং রিকভারি ইমেইল বা ফোন নম্বরে কোড পাঠিয়ে তা দিয়ে অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করুন। যদি হ্যাকার ইমেইল বা ফোন নম্বরও পরিবর্তন করে ফেলে, তাহলে ফেসবুকের ‘Identity Verification’ সিস্টেমে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ক্যান কপি পাঠাতে হবে।

এরপর ইমেইল ও পাসওয়ার্ড সিকিউরিটি চেক করুন। অনেক সময় হ্যাকাররা শুধু ফেসবুক নয়, আপনার ইমেইল বা অন্যান্য সোশ্যাল অ্যাকাউন্টেও ঢুকে যেতে পারে। তাই জিমেইল, ইয়াহু বা অন্য ইমেইল সার্ভিসে ‘Last Account Activity’ চেক করুন। সন্দেহজনক ডিভাইস রিমুভ করুন। একইভাবে অন্য যেসব অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন, সেগুলোর পাসওয়ার্ডও দ্রুত বদলে ফেলুন।

টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) চালু করা এখন আর অপশন নয়; বরং জরুরি। এতে হ্যাকার পাসওয়ার্ড পেলেও দ্বিতীয় ধাপের কোড ছাড়া ঢুকতে পারবে না। এ ছাড়া ‘Login Alerts’ চালু রাখলে অচেনা ডিভাইস বা লোকেশন থেকে কেউ লগইন করলে সঙ্গে সঙ্গে নোটিফিকেশন পাবেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—ফিশিং লিংক থেকে সাবধান। অনেক হ্যাকের মূল সূত্র হচ্ছে ভুয়া লগইন পেজ বা লোভনীয় অফারের লিংক। যেকোনো লিংকে ক্লিক করার আগে যাচাই করুন সেটি আসল ফেসবুক ডোমেইন কি না।

সবশেষে হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্ট ফিরে পাওয়ার পর বন্ধু ও ফলোয়ারদের সতর্ক করুন। হয়তো হ্যাকার আপনার নামে ভুয়া মেসেজ বা প্রতারণামূলক লিংক পাঠিয়েছে। সবাইকে জানিয়ে দিন যেন কেউ সেই লিংকে ক্লিক না করে।

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আমাদের ব্যক্তিগত জীবন, সামাজিক যোগাযোগ ও পেশাগত কাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই হ্যাক হওয়ার পর আতঙ্কিত না হয়ে ধাপে ধাপে সঠিক পদক্ষেপ নিন। ভবিষ্যতে সাইবার নিরাপত্তা নিয়মগুলো মেনে চলুন। একবার সচেতন হলে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।

হ্যাক-সংক্রান্ত সমস্যায় পড়লে জাতীয় সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার (CID) অথবা ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সিতে অভিযোগ জানাতে পারেন। এ ছাড়া ফেসবুকের অফিশিয়াল সাপোর্ট ফর্ম ব্যবহার করে সমস্যার বিস্তারিত রিপোর্ট করলে সমাধানের সম্ভাবনা থাকে।

সবশেষে মনে রাখবেন—ডিজিটাল নিরাপত্তা এক দিনের বিষয় নয়। এটি নিয়মিত অভ্যাসের ফল। শক্তিশালী ও অনন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার, নিয়মিত সিকিউরিটি চেকআপ, সন্দেহজনক অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে ফেসবুক লগইন এড়িয়ে চলা। এই অভ্যাসগুলোই আপনাকে হ্যাকিং থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত রাখবে।