ঢাকা ০২:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এআই ভিডিও, খুলে দিচ্ছে অবাস্তব জগতের দরজা

  • ফিচার ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৪:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫
  • ২৩০ বার পড়া হয়েছে

চারদিক বরফে ঢাকা। বলা হচ্ছে এটি অ্যান্টার্কটিকার একটি প্রত্যন্ত এলাকা। যেখানে স্থলভাগ শেষ। এরপর মহাকাশের শুরু। এরকম একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। সেখানে বলা হচ্ছে জায়গাটি পৃথিবীর শেষ প্রান্ত। আর সেখান থেকে জিনিস পত্র নিচে ফেলে দেখা হচ্ছে কী ঘটে!

দৃ্শ্য ব্যবস্থাপনা, দক্ষ সম্পাদনার সেই ভিডিও দেখে বোঝার উপায় নেই, এটা আসলে বাস্তব না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে করা হয়েছে সেই ভিডিও। যা সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। বহু মানুষ তাতে বিশ্বাস করছেন। তৈরি হচ্ছে বিভ্রান্তি।

ঠিক ওই জায়গা নিয়ে আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি বরফে ঢাকা একটি বেস ক্যাম্প দেখাচ্ছেন। সেখানে বেশ কয়েকটি তাঁবু। ওই ব্যক্তি আরেকজনের সাথে কথা বলেন। তিনি সেই পৃথিবীর শেষ প্রান্ত দেখিয়ে ‍ অন্য ব্যক্তিকে বলছেন, সাবধান। গর্ত অনেক গভীর। যেন অনন্তকাল ধরে পড়তে থাকা।

ভিডিও নির্মাতারা দাবি করছেন, তাঁরা পৃথিবীর এমন একটি জায়গায় পৌঁছেছেন যা কারো দেখার কথা ছিল না। এমনকি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই এলাকাটি সারা পৃথিবী থেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল।

ডিপ সি ভিজিটর নামে ইন্সটাগ্রাম পেজে দেখা যায়, বরফের ওপর গরম পোশাক পরে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। তিনি দেখাচ্ছেন ও জানাচ্ছেন তাঁর পেছন দিয়ে একটি হেলিকপ্টার ‘মহাকাশে’ উড়ে যাচ্ছে। তিনি বলছেন, আমরা পৃথিবীর শেষ সীমানায় দাঁড়িয়ে আছি। নাসা আমাদের খেয়াল করেছে। হয়তো আমার এটা রেকর্ড করা উচিত হয়নি।

অন্য একটি ভিডিওতে, ওই ব্যক্তি বলছেন, আমরা সাত দিন ধরে চলছি, ১ হাজার ২০০ মাইল পথ অতিক্রম করেছি, তবুও শেষ খুঁজে পাইনি।

এআই দিয়ে করা এসব ভিডিও নকল পৃথিবীর দরজা খুলে দিয়েছে। এতে বেড়ে যাবে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের দৌড়ও। একেবারে বাস্তব ভিডিও করে দেওয়ার জন্য এরইমধ্যে নজর কেড়েছে গুগল ভিও ৩।

আপনি যদি ইন্সটাগ্রামের ওই পেজটির সঙ্গে পরিচিত না হন এবং এই ধরনের অ্যান্টার্কটিকার ভিডিও প্রথমবার দেখেন, তবে আপনি অবাক হবেন। কিন্তু ওই পেজের আরও ভিডিও দেখলে বোঝা যায় এখানে এআই ব্যবহার করে অবাস্তব ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।

অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে দলটি বরফ খুঁড়ে এলিয়েনের সমাধি পেয়েছে এবং তার ভেতরে একটি অবয়ব রয়েছে। তারা ‘কঙ্কালটি’ বের করে একটি স্লেজে করে বরফের ওপর দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

ভিডিওগুলোতে অনেকেই মন্তব্য করেন। যাদের অনেকেই বেশ সচেতন। তবুও এসব ভিডিও কৌতুহল ও সাময়িক উত্তেজনা তৈরি করছে। এমনকি এসব ভিডিতে বলিউড তারকা হৃত্বিক রোশন পর্যন্ত থাম্বস আপ দিয়েছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, এআই তবু দারুণ ভিডিও। আরেকজন মন্তব্য করেছেন, আমি এখনও পর্যন্ত দেখা সেরা এআই ভিডিও এটি।

এখন মানুষকে প্রতারণা করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এআই। গুগল বলছে, ভিও ৩ দিয়ে আপনি কেবল অসাধারণ দৃশ্যই নয়, কথোপকথন এবং অডিওও তৈরি করে আরও বাস্তবসম্মত কাজ করতে পারেন। এ ধরনের টুল ব্যবহার করে তৈরি করা বেশ কিছু ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে, যা দেখে মানুষ অবাক হচ্ছে। কারণ এর বাস্তবতার মাত্রা সত্যিই বিস্ময়কর।

তবে ভালোভাবে দেখলে কিছু ত্রুটিও ধরা পড়ে। মানুষ কর্তৃপক্ষের কাছে এআই এর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের দাবি জানাচ্ছে, কারণ তাদের শঙ্কা, একদিন তা ব্যাপক জটিলতা সৃষ্টি করবে। স্ক্যাম এবং অবৈজ্ঞানিক মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গিও ছড়িয়ে পড়ছে।

মালয়েশিয়ায় এক বয়স্ক দম্পতি একটি পর্যটন কেন্দ্রের ভিডিও দেখে সেখানে যাওয়ার জন্য অনেক পথ পাড়ি দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন এমন কোনো জায়গার অস্তিত্ব নেই!

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত

এআই ভিডিও, খুলে দিচ্ছে অবাস্তব জগতের দরজা

আপডেট সময় : ০১:১৪:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

চারদিক বরফে ঢাকা। বলা হচ্ছে এটি অ্যান্টার্কটিকার একটি প্রত্যন্ত এলাকা। যেখানে স্থলভাগ শেষ। এরপর মহাকাশের শুরু। এরকম একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। সেখানে বলা হচ্ছে জায়গাটি পৃথিবীর শেষ প্রান্ত। আর সেখান থেকে জিনিস পত্র নিচে ফেলে দেখা হচ্ছে কী ঘটে!

দৃ্শ্য ব্যবস্থাপনা, দক্ষ সম্পাদনার সেই ভিডিও দেখে বোঝার উপায় নেই, এটা আসলে বাস্তব না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে করা হয়েছে সেই ভিডিও। যা সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। বহু মানুষ তাতে বিশ্বাস করছেন। তৈরি হচ্ছে বিভ্রান্তি।

ঠিক ওই জায়গা নিয়ে আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি বরফে ঢাকা একটি বেস ক্যাম্প দেখাচ্ছেন। সেখানে বেশ কয়েকটি তাঁবু। ওই ব্যক্তি আরেকজনের সাথে কথা বলেন। তিনি সেই পৃথিবীর শেষ প্রান্ত দেখিয়ে ‍ অন্য ব্যক্তিকে বলছেন, সাবধান। গর্ত অনেক গভীর। যেন অনন্তকাল ধরে পড়তে থাকা।

ভিডিও নির্মাতারা দাবি করছেন, তাঁরা পৃথিবীর এমন একটি জায়গায় পৌঁছেছেন যা কারো দেখার কথা ছিল না। এমনকি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই এলাকাটি সারা পৃথিবী থেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল।

ডিপ সি ভিজিটর নামে ইন্সটাগ্রাম পেজে দেখা যায়, বরফের ওপর গরম পোশাক পরে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। তিনি দেখাচ্ছেন ও জানাচ্ছেন তাঁর পেছন দিয়ে একটি হেলিকপ্টার ‘মহাকাশে’ উড়ে যাচ্ছে। তিনি বলছেন, আমরা পৃথিবীর শেষ সীমানায় দাঁড়িয়ে আছি। নাসা আমাদের খেয়াল করেছে। হয়তো আমার এটা রেকর্ড করা উচিত হয়নি।

অন্য একটি ভিডিওতে, ওই ব্যক্তি বলছেন, আমরা সাত দিন ধরে চলছি, ১ হাজার ২০০ মাইল পথ অতিক্রম করেছি, তবুও শেষ খুঁজে পাইনি।

এআই দিয়ে করা এসব ভিডিও নকল পৃথিবীর দরজা খুলে দিয়েছে। এতে বেড়ে যাবে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের দৌড়ও। একেবারে বাস্তব ভিডিও করে দেওয়ার জন্য এরইমধ্যে নজর কেড়েছে গুগল ভিও ৩।

আপনি যদি ইন্সটাগ্রামের ওই পেজটির সঙ্গে পরিচিত না হন এবং এই ধরনের অ্যান্টার্কটিকার ভিডিও প্রথমবার দেখেন, তবে আপনি অবাক হবেন। কিন্তু ওই পেজের আরও ভিডিও দেখলে বোঝা যায় এখানে এআই ব্যবহার করে অবাস্তব ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।

অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে দলটি বরফ খুঁড়ে এলিয়েনের সমাধি পেয়েছে এবং তার ভেতরে একটি অবয়ব রয়েছে। তারা ‘কঙ্কালটি’ বের করে একটি স্লেজে করে বরফের ওপর দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

ভিডিওগুলোতে অনেকেই মন্তব্য করেন। যাদের অনেকেই বেশ সচেতন। তবুও এসব ভিডিও কৌতুহল ও সাময়িক উত্তেজনা তৈরি করছে। এমনকি এসব ভিডিতে বলিউড তারকা হৃত্বিক রোশন পর্যন্ত থাম্বস আপ দিয়েছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, এআই তবু দারুণ ভিডিও। আরেকজন মন্তব্য করেছেন, আমি এখনও পর্যন্ত দেখা সেরা এআই ভিডিও এটি।

এখন মানুষকে প্রতারণা করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এআই। গুগল বলছে, ভিও ৩ দিয়ে আপনি কেবল অসাধারণ দৃশ্যই নয়, কথোপকথন এবং অডিওও তৈরি করে আরও বাস্তবসম্মত কাজ করতে পারেন। এ ধরনের টুল ব্যবহার করে তৈরি করা বেশ কিছু ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে, যা দেখে মানুষ অবাক হচ্ছে। কারণ এর বাস্তবতার মাত্রা সত্যিই বিস্ময়কর।

তবে ভালোভাবে দেখলে কিছু ত্রুটিও ধরা পড়ে। মানুষ কর্তৃপক্ষের কাছে এআই এর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের দাবি জানাচ্ছে, কারণ তাদের শঙ্কা, একদিন তা ব্যাপক জটিলতা সৃষ্টি করবে। স্ক্যাম এবং অবৈজ্ঞানিক মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গিও ছড়িয়ে পড়ছে।

মালয়েশিয়ায় এক বয়স্ক দম্পতি একটি পর্যটন কেন্দ্রের ভিডিও দেখে সেখানে যাওয়ার জন্য অনেক পথ পাড়ি দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন এমন কোনো জায়গার অস্তিত্ব নেই!